Bilkis Bano

Bilkis Bano Case: ‘ধর্ষকদের দেখে মনে হচ্ছে যেন নায়ক!’ ১৮ বছরের ‘যুদ্ধ ব্যর্থ’, বিস্মিত বিলকিসের স্বামী

ইয়াকুব বলেন, “এক জন দোষী প্যারোলে ছাড়া পেলে ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতাম আমরা। ১১ জনের মুক্তির পর মনের অবস্থাটা ঠিক কী, আপনারাই বুঝে নিন।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আমদাবাদ শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২২ ১৬:২০
Share:

১১ জন সাজাপ্রাপ্তের মুক্তিতে তাঁরা ভয়ে ভয়ে রয়েছেন, জানালেন বিলকিস বানোর স্বামী। —ফাইল চিত্র।

ন্যায়বিচারের জন্য ১৮ বছরের যুদ্ধ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ধর্ষকদের নিয়েও যে মাতামাতি হবে, তা তাঁর সুদূর কল্পনাতেও ছিল না। বিলকিস বানোর ১১ ধর্ষকের মুক্তির ঘটনায় এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন তাঁর স্বামী ইয়াকুব রসুল।

Advertisement

গত ১৫ অগস্ট গুজরাত জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে সেই ১১ জন, যারা ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করেছিল। তাঁর তিন বছরের মেয়েকে আছড়ে মেরেছিল মায়ের চোখের সামনে। ‘খুন’ হয়েছিলেন বিলকিসের পরিবারের মোট ৮ জন। ২০০৮ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত সেই ১১ জন ‘আজাদির’ স্বাদ পেয়েছে গত ১৫ অগস্ট। ১৫ বছর জেলে থাকার পর সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন এক সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। শীর্ষ আদালত বিষয়টি পাঠায় গুজরাত সরকারের কাছে। সরকার বিবেচনা করে এই ১১ জনকে মুক্তি দেয়।

Advertisement

জেল থেকে মুক্তি পেতেই জুটেছে গলায় মালা, মুখে মিষ্টি। এক জন জনপ্রতিনিধি বলছেন, এই ধর্ষকদের ‘স্বভাব-চরিত্র ভাল’। এ সব যতই দেখছেন আর শুনছেন ততই বিস্মিত হচ্ছেন বিলকিসের স্বামী।

গত কয়েক বছরে বার বার নিজেদের ঠিকানা বদলেছে বিলকিসের পরিবার। সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে স্ত্রীর ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ইয়াকুব। তবে শর্ত ছিল, যে ঠিকানা থেকে তিনি কথা বলছেন, তা যেন প্রকাশিত না হয়। ইয়াকুবের কথায়, “বিলকিস তো এতটাই বিস্মিত যে এখনও পর্যন্ত কারও সঙ্গে ঠিক করে কথাই বলছে না। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে ধর্ষকদের মুক্তির ছবি দেখছি। কেউ কেউ এসে জানাচ্ছেন। সংবাদমাধ্যম আমাদের প্রতিক্রিয়া চাইছে।” এর পর ইয়াকুবের সংযোজন, “প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি যে এমনটা হয়েছে। পরে জানলাম, হ্যাঁ। এটাই সত্যি। বিলকিসকে গিয়ে বললামও সে কথা। ও শুনে একেবারে চুপ হয়ে গেল।”

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা দিবসে ওই ১১ সাজাপ্রাপ্তের জেল থেকে মুক্তির পর গোধরার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দফতরে তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। তার পরেই গোধরার বিজেপি বিধায়ক সিকে রাউজি জানান, এদের স্বভাব-চরিত্র বেশ ভাল।

ইয়াকুব বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্ত এক ঝটকায় আমাদের ১৮ বছরের লড়াইকে শেষ করে দিয়েছে। গত দু’দশক একের পর এক আদালতে ছুটেছি।” একটু পরে তিনি বলেন, “দেখে মনে হচ্ছে ধর্ষকদের নিয়ে উদ্‌যাপন শুরু হয়েছে। ওরা যেন নায়ক!” ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট ৫০ লক্ষ টাকা এবং সরকারি চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয়, ইয়াকুব ভেবেছিলেন আবার নতুন করে শুরু করবেন সব। বলেন, “সবে নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছিলাম। তখনই এল এই ঝটকা।”

সংবাদমাধ্যমকে ইয়াকুব আরও বলেন, “এক জন দোষী যখন প্যারোলে ছাড়া পেত, ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতাম আমরা। ১১ জনের মুক্তির পর আমাদের মনের অবস্থা ঠিক কী, আপনারাই বুঝে নিন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement