গৌতম নওলাখা। ফাইল চিত্র।
ভীমা কোরেগাঁও মামলায় সমাজকর্মী আনন্দ তেলতুম্বডে এবং গৌতম নওলাখার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। তিন সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। অবিলম্বে জমা দিতে হবে পাসপোর্টও।
সোমবার বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি এম আর শাহ বলেছেন, আনন্দ এবং গৌতমের বিরুদ্ধে ইউএপিএ মামলা রয়েছে। ইউএপিএ আইনের ৪৩ঘ(৪) ধারা মোতাবেক অভিযুক্তদের আগাম জামিন দেওয়া যায় না। আনন্দের আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং গৌতমের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে তাঁরা মনে করিয়ে দেন, হাইকোর্ট বলেছে যে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। বিচারপতি মিশ্র এও বলেন যে, দুই অভিযুক্ত গত দেড় বছর ধরে গ্রেফতারি থেকে অব্যাহতি পেয়ে এসেছেন। ‘‘আমরা ওঁদের তিন সপ্তাহ সময় দিচ্ছি।’’
তিন সপ্তাহ সময় দেওয়ার জন্যই সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গৌতম। বিবৃতি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এবং আমার সহ-অভিযুক্তেরা কোনও দিন স্বাধীনতা ফিরে পাব? এই প্রশ্ন মনে আসছে, কারণ আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি, যখন নাগরিক স্বাধীনতা ক্রমশ খর্ব হচ্ছে। ইউএপিএ এমন একটা আইন, যার বলে অত্যন্ত সাধারণ বিধিসঙ্গত আলাপ-আলোচনাও
রাষ্ট্রের চোখে অপরাধ বলে তকমা পেতে পারে। এই আইন বিচারপ্রক্রিয়াটিকে পর্যন্ত শাস্তিমূলক করে তুলেছে।’’
আদালতে সিঙ্ঘভি সওয়াল করেছিলেন, তাঁর মক্কেলকে এর আগে সহিংস বিদ্রোহীদের মূলস্রোতে ফেরাতে মধ্যস্থের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আজ তাঁকেই সহিংস বিদ্রোহী বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে! সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা পাল্টা সওয়াল করেন, ভীমা মামলায় বাকি অভিযুক্তরা গ্রেফতারই হয়েছেন। এই দু’জন ব্যতিক্রম। ‘‘ওঁদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা দরকার।’’ ভারভারা রাওয়ের কথা উল্লেখ করে মেহতা দাবি করেন, ‘‘উনি তো কবি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ওঁর সঙ্গে রকেট লঞ্চার এবং গ্রেনেড ছিল বলে তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। সুধা ভরদ্বাজের মতো আইনজীবীও চক্রান্তের অংশীদার ছিলেন।’’
সিব্বল বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে আনন্দ আর গৌতমের প্রত্যক্ষ যোগ মেলেনি। কেউ কারও নাম করে কিছু লিখলেই প্রমাণ হয় না যে, তিনি যুক্ত ছিলেন।’’ এই প্রসঙ্গে বিচারপতি শাহ বলেন, ‘‘যদি আদালত প্রথমে হস্তক্ষেপ না করে থাকে এবং যদি দেখা যায় মামলায় আপনার উল্লেখ রয়েছে, তা হলে আপনার বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভাবে মামলা রয়েছে বলে ধরা হবে না?’’