— প্রতীকী ছবি।
মধ্যপ্রদেশের খান্ডওয়াতে গোমাংস নিয়ে যাওয়ার ‘অপরাধে’ দুই যুবককে রাস্তায় ফেলে মারধর করলেন বজরং দলের সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে নিগৃহীত দুই যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হননি।
২০১৫-র ২৮ সেপ্টেম্বর। উত্তরপ্রদেশের দাদরির বিসারা গ্রামে গুজব রটে যায়, মহম্মদ আখলাকের বাড়িতে গরুর মাংস রয়েছে। গ্রামের মানুষ হামলা চালায় আখলাকের বাড়িতে। গণপিটুনিতে মারা যান ৫২ বছরের আখলাক। এর পরে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন রূপে বার বার গোরক্ষকদের গুন্ডামির ছবি ধরা পড়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পর্যন্ত বলতে হয়েছে, ‘‘গো-রক্ষার অর্থ মানুষ খুন করা নয়।’’ কিন্তু তাতেও এই পর্বে ইতি পড়েনি। ২০২৩-এও কার্যত দাদরির ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটল মধ্যপ্রদেশের খান্ডওয়াতে।
গত বুধবার, খান্ডওয়া পলিটেকনিক কলেজের সামনে দুই বাইক আরোহীকে থামান বজরং দলের স্বঘোষিত গোরক্ষকরা। অভিযোগ, সিহাদা গ্রামের দুই বাসিন্দা ইমলিপুরা থেকে গোমাংস নিয়ে আসছিলেন। বাইক আরোহীরা বজরং দলের সদস্যদের জানান, তাঁদের সঙ্গে ব্যাগে খাসির মাংস রয়েছে, গরু নয়। তা শুনে আরও খেপে ওঠেন গোরক্ষকরা। শুরু হয় রাস্তায় ফেলে মারধর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, লাঠি, রড দিয়ে দু’জনকে বেধড়ক মারধর করেন বজরং দলের সদস্যরা। পুলিশ এসে দু’জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। যদিও পুলিশ বজরং দলের সদস্যদের কিছুই বলেনি। তাঁরা তখন প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
মারধরের খবর অস্বীকার করেছে বজরং দল। জেলা আহ্বায়ক আদিত্য মেহতা বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা লক্ষ করেন, দু’জন গোমাংস নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের কর্মীরা তাঁদের থামান এবং রামেশ্বর চৌকিতে নিয়ে যান।’’ যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। পুলিশ সুপার সত্যেন্দ্র শুক্ল বলেন, ‘‘মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েক জন আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তাঁরা একটি ভিডিয়ো দেখিয়েছেন আমাকে। আমরা সেই ভিডিয়ো যথাস্থানে পৌঁছে দিয়েছি। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে দু’টি পৃথক মামলা রুজু হয়েছে। দুই যুবক যে মাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন, তার কোনও রশিদ তাঁরা দেখাতে পারেননি। তাই দুই মুসলিম যুবকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। পশু চিকিৎসকরা মাংসটি কোন প্রাণীর, তা জানার চেষ্টা করছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।