জলের তোড়ে উল্টে গেল ট্রেন। হাফলঙে। ছবি: পিটিআই।
মাত্র কয়েক মিনিট। গোটা হাফলং স্টেশনকে গ্রাস করে ফেলল জল-কাদার স্রোত। পুরো চেহারাই বদলে গেল স্টেশনের। কোথায় স্টেশন! কয়েক মিনিটে চারপাশ যেন একটা স্রোতস্বিনীর চেহারা নিয়ে ফেলেছিল। চারদিকটা ঘোলা। অঝোরে বৃষ্টি চলছিল। তার মধ্যেই গাছ, কাঠ, ধ্বংসস্তূপ ঠেলে নিয়ে স্টেশনেই দাঁড়িয়ে থাকা একটি গোটা ট্রেনের উপর আছড়ে পড়ল সেই জল।
খেলনার মতো একের পর এক বগি উল্টে দিল সেই জলের স্রোত। শিউরে ওঠা সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। আর এই ছবিই বলে দিচ্ছে অসমের বন্যা পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ।
বন্যায় প্রভাবিত বাজালি, বাকসা, কাছাড়, চরাইদেও, দারাং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, ডিমা হাসাও, কামরূপ, কার্বি আলং, নওগাঁও, শোনিতপুর, মাজুলি এবং হোজাই-সহ ২০টি জেলা। এই জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হোজাই এবং কাছাড় জেলার। হোজাইয়ে ৭৯ হাজার মানুষ বন্যার কবলে। অন্য দিকে, কাছাড়ে বন্যায় প্রভাবিত প্রায় ৫২ হাজার মানুষ। প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। মোট ৬৫২টি গ্রামের দু’লক্ষাধিক মানুষ বন্যার কবলে।
কাছাড়ে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ডিমা হাসাওয়ে ধসে মৃত্যু হয়েছে আরও তিন জনের। ধসের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে হাফলং এবং ডিমা হাসাও। গুয়াহাটি-শিলচর এক্সপ্রেস নিউ হাফলং স্টেশনে বন্যার কারণে আটকে পড়েছিল। ট্রেনে আটকে থাকা ১০০ যাত্রীকে বায়ুসেনার কপ্টারে উদ্ধার করে। অন্য দিকে, শিলচর-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ডিমা হাসাও এবং কাছাড় জেলার মাঝামাঝি স্থানে আটকে পড়ে।
১৫ মে থেকে হাফলঙের সঙ্গে সড়ক, রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ডিমা হাসাওয়ের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো অবস্থা এই জেলার। বন্যার কারণে ডিমা হাসাওয়ের লামডিং-বদরপুর ট্রেন শাখা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে দক্ষিণ অসম, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরার রেল যোগাযোগ থমকে গিয়েছিল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল জানিয়েছে, দ্রুত পরিষেবা চালু করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।