Delhi Assembly Election 2025

দিল্লিতেও মমতার ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ মডেল, মহিলাদের মাসে হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা, জিতলে বৃদ্ধি অঙ্কে

দীর্ঘ দিন সরকারে থাকলে সংশ্লিষ্ট দলের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা তৈরি হয়। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যের ভোটে দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের অ্যাকাউন্টে মাসে নগদ দেওয়ার প্রকল্প সেই প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতাকে ম্লান করে দিচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৩০
Share:

ভোটের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মডেলই অনুসরণ করল দিল্লির আম আদমি পার্টি। —ফাইল ছবি।

‘লক্ষ্মীবারে’ লক্ষ্মীর ভান্ডারের ঘোষণা দিল্লিতে।

Advertisement

দিল্লির বিধানসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পকেই ‘মডেল’ করলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ১৮ বছরের উর্ধ্বে সব মহিলাকে মাসে এক হাজার টাকা করে অনুদান প্রকল্প ঘোষণা করলেন আপের সর্বময় নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনাকে পাশে নিয়ে বৃহস্পতিবার কেজরীওয়াল জানিয়েছেন, মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই আপ সরকার এই প্রকল্প শুরু করতে চলেছে। বৃহস্পতিবার থেকেই মহিলাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আপপ্রধান।

ভোটের মুখে শুধু হাজার টাকা দেওয়াই নয়, ভোটে জিতলে সেই অঙ্ক যে দ্বিগুণেরও বেশি হবে, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেজরীওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, দিল্লিতে ফের আপের সরকার হলে ভোটের পর থেকে মহিলারা প্রতি মাসে ২,১০০ টাকা করে পাবেন। কেজরীওয়াল বলেছেন, ‘‘গত মার্চ মাসে আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই এই প্রকল্প শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিজেপি আমায় জেলে ঢুকিয়ে তা আটকে দিয়েছিল।’’

Advertisement

মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, কর্নাটকের পর মহারাষ্ট্র, ঝাড়ঘণ্ডে সদ্যসমাপ্ত ভোটের ফলেও দেখা গিয়েছে, মহিলাদের মাসে নগদ দেওয়ার কৌশল জাদুদণ্ডের কাজ করেছে। দীর্ঘ দিন সরকারে থাকলে সংশ্লিষ্ট দলের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা তৈরি হয়। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যের ভোটে দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের অ্যাকাউন্টে মাসে নগদ দেওয়ার প্রকল্প সেই প্রতিষ্ঠান- বিরোধিতাকে ম্লান করে দিচ্ছে। ২০২১ সালের ভোটের আগে বাংলায় এই প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। ভোটে জিতে তা বাস্তবায়িতও করেছিলেন তিনি। রাজ্যে রাজ্যে মমতার সেই মডেলই অনুসৃত হচ্ছে। সেই তালিকায় যেমন কংগ্রেস-সহ অবিজেপি দল রয়েছে, তেমনই বিজেপি-ও সেই ‘মমতা মডেল’ই অনুসরণ করছে বিভিন্ন রাজ্যে। নাম আলাদা হলেও ছাঁচ এক। দিল্লিতে এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সম্মান যোজনা’। আপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই প্রকল্পের জন্য দিল্লি সরকারের মাসে খরচ হবে দু’হাজার কোটি টাকা।

বাংলাতেও লক্ষ্মীর ভান্ডার শুরু হয়েছিল সাধারণ শ্রেণির মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি-জনজাতিভুক্ত মহিলাদের জন্য মাসে ১,০০০ টাকা দিয়ে। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সেই অঙ্ক বেড়ে হয় যথাক্রমে ১,০০০ টাকা এবং ১,২৫০ টাকা। সরকারি স্তরের একাংশের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সেই অঙ্ক আরও বাড়তে পারে।

দিল্লির ভোটের আগে পরবর্তী অঙ্কের প্রতিশ্রুতিও দিয়ে রেখেছেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল। উল্লেখ্য, এই ধরনের অনুদানকে এক সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘রেউড়ি পলিটিক্স’ (খয়রাতির রাজনীতি) বলে কটাক্ষ করতেন। কিন্তু দেখা গিয়েছে, প্রতিষ্ঠান- বিরোধিতার ‘মেঘ’ কাটাতে মোদীর দলকেও মমতার তৈরি করা মডেলই অনুসরণ করতে হয়েছে। দিল্লিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভোট হওয়ার কথা। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনও নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেনি। ‘আদর্শ আচরণবিধি’ বলবৎ হওয়ার আগে কেজরীওয়াল ‘মমতার মডেল’ ঘোষণা করে দিলেন দিল্লির ভোট ময়দানে। সাম্প্রতিক প্রায় সব ভোটেই এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে দলগুলি। কর্নাটক, তেলঙ্গনায় এই প্রকল্পের জাদুতে বিরোধী থেকে শাসকের আসনে পৌঁছেছে কংগ্রেস। যেমন মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে বিজেপি জোট এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। কেজরীওয়াল সফল হলে আরও এক বার প্রমাণিত হবে মমতার শুরু-করা এই মডেলের ‘অমোঘতা’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement