হেনস্থার অভিযোগ থাকা মানেই তা আত্মহত্যায় প্ররোচনা নয়, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। — প্রতীকী চিত্র।
কারও বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ থাকা মানেই তিনি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন, এমন নয়। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এর জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে প্ররোচনা দেওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ প্রয়োজন। শুধুমাত্র হেনস্থা করার অভিযোগে কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।
গুজরাতের এক বধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। বধূর মৃত্যুর পর তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই মামলা খারিজের আবেদন নিয়ে প্রথমে গুজরাত হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন স্বামী ও তাঁর পরিবার। কিন্তু হাই কোর্টের রায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যায়। পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি পিবি ভারালের বেঞ্চ মহিলার স্বামী এবং তাঁর পরিবারের পক্ষে রায় দিয়েছে।
২০০৯ সালে ওই মহিলার বিয়ে হয়। বিয়ের পাঁচ বছর পরেও তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি। অভিযোগ, সেই সময় থেকেই মহিলাকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে হেনস্থা করা শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা। ২০২১ সালে তিনি আত্মঘাতী হন। মহিলার বাবার অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরাই তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন। নিম্ন আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের নির্দেশ দেয়। পরে হাই কোর্টও নিম্ন আদালতের নির্দেশই বহাল রাখে। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, অভিযুক্তদের কোনও কাজ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আত্মহত্যায় ইন্ধন দিয়েছে, তা প্রমাণ করতে হবে। শুধুমাত্র হেনস্থা করার অভিযোগে কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ায় দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।
ঘটনাচক্রে, সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ এমন একটি সময়ে এসেছে, যখন বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অতুল সুভাষের আত্মহত্যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশে। ওই তরুণের মৃত্যুর পর উদ্ধার হয়েছে ২৪ পাতার একটি ‘সুইসাইড নোট’। ৮১ মিনিটের একটি ভিডিয়োয় পেয়েছে পুলিশ। ভিডিয়ো এবং সুইসাইড নোটে বার বার স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে হেনস্থা এবং টাকা চাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ওই ঘটনায় নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের লোকেদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করেছে পুলিশ।