মণিপুরে টহল সেনাবাহিনীর। —ফাইল চিত্র।
নতুন করে প্রাণহানি রুখতে এ বার পায়ে হেঁটে টহল দেওয়ার পরিবর্তে মণিপুরে প্রযুক্তির উপর জোর দিতে চলেছে সেনা। সেনা সূত্রে খবর, মণিপুরের ইম্ফল উপত্যকা এবং পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালাতে চাইছে তারা। এমনকি মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া অংশেও মানববিহীন ড্রোন ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে সেনা।
মণিপুরে জাতি হিংসার গোড়ার দিন থেকেই সব চেয়ে বেশি উত্তপ্ত থেকেছে সে রাজ্যের পাহাড় এবং সমতলকে সংযুক্ত করা স্থানগুলি। ভৌগলিক আকারের দিক থেকে ইম্ফল উপত্যকা সমতল। আর তাকে চক্রাকারে ঘিরে রয়েছে পাহাড়ি অঞ্চল। মণিপুরে যে দুই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, তার মধ্যে মেইতেইদের বাস উপত্যকা অঞ্চলে। আর কুকি উপজাতিদের বাস পাহাড়ি অঞ্চলে। পাহাড় এবং সমতলের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী জেলাগুলিতে অবৈধ জমায়েত থেকে বার বার হামলা করা হয়েছে সেনার উপরে। স্থানীয় গ্রামেও খুন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এই প্রসঙ্গে সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মায়ানমার সীমান্ত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য এবং উপদ্রুত অঞ্চলগুলিতে নতুন করে অবৈধ জমায়েত হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য মানববিহীন ড্রোনকে কাজে লাগানো হচ্ছে। রাতেও কোনও জমায়েত হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য ‘নাইট ভিশন ক্যামেরা’ও ব্যবহার করা হচ্ছে। আলাদা করে নজরদারি চালানো হচ্ছে ২ এবং ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে। যদিও নিরাপত্তাগত কারণেই এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছে না সেনা।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ধারাবাহিক হিংসায় নিহতের সংখ্যা দেড়শো ছুঁতে চলছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক করলেও তার পরেও হিংসার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।