অঙ্কিতার দেহ দাহে সম্মতি পরিবারের। ফাইল ছবি।
ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে না পেলে দাহ করার অনুমতি দেওয়া হবে না অঙ্কিতাকে। এই দাবিতে দীর্ঘক্ষণ অনড় থাকার পর শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের বারংবার আবেদনে সাড়া দিয়ে মেয়ের দেহ দাহ করার অনুমতি দিয়েছে অঙ্কিতা ভান্ডারির পরিবার।
যদিও বিজেপি নেতার ছেলের রিসর্টে চাকুরিরতা অঙ্কিতা ভান্ডারির রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এখনও ক্ষোভে ফুঁসছে উত্তরাখণ্ড। অঙ্কিতার পরিবার এবং তাঁর পরিচিতদের একাংশের অভিযোগ, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। কিন্তু তাতে নেই বিস্তারিত তথ্য। যা নিয়ে খুশি নয় অঙ্কিতার পরিবার। পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে বিজেপি নেতার ছেলের রিসর্ট ভেঙে দেওয়া নিয়েও।
রিসর্টে কর্মরত ১৯ বছরের অঙ্কিতার মৃতদেহ উদ্ধার হয় একটি খাল থেকে। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, অঙ্কিতাকে রিসর্টে আসা অতিথিদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতে চাপ দিতেন বিজেপি নেতার ছেলে পুলকিত আর্য। অভিযোগ, তা নিয়েই ঝামেলায় অঙ্কিতাকে ধাক্কা মেরে খালে ফেলে খুন করেন পুলকিতরা।
পুলিশ অঙ্কিতার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তার পরই একে একে বেরিয়ে আসে রহস্যমৃত্যু সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য। রবিবার অঙ্কিতার দেহের ময়ানতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। কিন্তু সেই রিপোর্ট নিয়েও আপত্তি ওঠে। সূত্রের খবর, রিপোর্টে অঙ্কিতার মৃত্যুর কারণ হিসেবে জলে ডুবে মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তাতে নেই কোনও বিস্তারিত তথ্য। তাই এই রিপোর্টকে মানতে পারছেন না অঙ্কিতার প্রিয়জনেরা। প্রতিবাদে যে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছে, তার সামনে শ্রীনগর-কেদারনাথ রাজপথ অবরোধ করেন মহিলারা। এতে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে দফায় দফায় অঙ্কিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয় প্রশাসনের তরফে। শেষ পর্যন্ত মেয়ের দেহ দাহ করতে সম্মত হন অঙ্কিতার বাবা, মা। তাঁরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন, যেন রাজপথ অবরোধকারীদের বুঝিয়ে তুলে দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বিজেপি নেতার ছেলে পুলকিতের রিসর্টটি। অঙ্কিতার পরিবারের একটি অংশের দাবি, বিজেপি নেতার ছেলেকে বাঁচাতেই তড়িঘড়ি রিসর্ট গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। কারণ ওই রিসর্টে এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অকাট্য প্রমাণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রঙও। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়াত বলেন, ‘‘এটা পরিকল্পিত খুন। মানুষের সন্দেহ, প্রমাণ লোপাট করতেই রিসর্ট ভাঙা হয়েছে।’’