Ankita Bhandari

চলত ‘যৌনতার খেলা’! প্রমাণ মুছতেই কি ভাঙা হল বিজেপি নেতার ছেলের রিসর্ট? কেনই বা খুন অঙ্কিতাকে?

উত্তরাখণ্ডে একটি রিসর্টের রিসেপশনিস্টকে খুনের অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট না পেলে অঙ্কিতার শেষকৃত্য করা হবে না, হুঁশিয়ারি তরুণীর বাবার।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
দেহরাদূন শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:৩৯
Share:
০১ ২০

পরতে পরতে রহস্য! উত্তরাখণ্ডের রিসর্টের রিসেপশনিস্ট অঙ্কিতা ভণ্ডারীকে খুনের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড়। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট না দেওয়া হলে, তরুণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে না। এমনই হুঁশিয়ারি দিল অঙ্কিতার পরিবার। প্রমাণ লোপাট করতেই কি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিজেপি নেতার ছেলের ওই রিসর্ট? এমন প্রশ্নও উঠেছে।

০২ ২০

শনিবার সকালে উত্তরাখণ্ডের চাল্লি খাল থেকে অঙ্কিতার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, জলে ডুবে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তরুণীর। এ-ও বলা হয়েছে, মৃত্যুর আগে অঙ্কিতার দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

Advertisement
০৩ ২০

ময়নাতদন্তের এই প্রাথমিক রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় অঙ্কিতার পরিবার। তাঁর বাবা বীরেন্দ্র সিংহ ভণ্ডারী বলেছেন, ‘‘ময়নাতদন্তের এই রিপোর্টে আমি সন্তুষ্ট নই। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট যত ক্ষণ না পাচ্ছি, তত ক্ষণ আমরা শেষকৃত্যের কাজ সম্পন্ন করব না।’’

০৪ ২০

হরিদ্বারের বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যের পুত্র পুলকিতের রিসর্টে রিসেপশনিস্টের কাজ করতেন অঙ্কিতা। গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টের পর থেকে নিখোঁজ হন তিনি।

০৫ ২০

নিখোঁজ হওয়ার ছয় দিন পর শনিবার সকালে চাল্লি খাল থেকে অঙ্কিতার দেহ উদ্ধার করা হয়। তার পরই হৃষীকেশে এমসে তরুণীর ময়নাতদন্ত করা হয়।

০৬ ২০

অঙ্কিতাকে হত্যার অভিযোগের তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। ওই রিসর্টে অতিথিদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে অঙ্কিতাকে জোর করা হত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাতে রাজি না হওয়াতেই অঙ্কিতাকে খুন করা হয় বলেও অভিযোগ।

০৭ ২০

হোয়াটসঅ্যাপে কাছের এক বন্ধুকে ওই রিসর্টের কুকর্মের কথা জানিয়েছিলেন অঙ্কিতা। বন্ধুকে অঙ্কিতা লিখেছিলেন, ‘গরিব হতে পারি। কিন্তু ১০ হাজার টাকার জন্য নিজেকে বিক্রি করতে পারব না।’ এই তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

০৮ ২০

অঙ্কিতার এক ফেসবুক বন্ধু দাবি করেছেন, রিসর্টে অতিথিদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে জোর করা হত অঙ্কিতাকে। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়াতেই তাঁকে খুন করা হয়।

০৯ ২০

ডিজিপি অশোক কুমারও এই দাবি করেছেন। তিনিও জানিয়েছেন যে, অতিথিদের ‘খুশি করতে’ অঙ্কিতাকে ‘চাপ দিতেন’ রিসর্ট মালিক।

১০ ২০

গত ২১ সেপ্টেম্বর অঙ্কিতার নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় থানায়। দায়ের করা হয় এফআইআর। এর পরই হরিদ্বারের বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যের ছেলে পুলকিত, তাঁর বন্ধু সৌরভ ও অঙ্কিতকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রয়েছেন।

১১ ২০

পুলিশ সূত্রে দাবি, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা নাগাদ পুলকিত, সৌরভ ও অঙ্কিতের সঙ্গে হৃষীকেশে গিয়েছিলেন অঙ্কিতা। তিন যুবকের সঙ্গে অঙ্কিতার বচসা বেধেছিল। ওই রিসর্টে কুকর্মের কথা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন অঙ্কিতা। তার পরই তাঁকে চিল্লা খালে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জেরায় ধৃতরা খুনের কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি পুলিশের।

১২ ২০

পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের কিছু সময় আগে তাঁর ব্যাগ নিয়ে আসার জন্য কাঁদতে কাঁদতে রিসর্টের শেফ (রাঁধুনি) মনবীর সিংহকে ফোন করেছিলেন অঙ্কিতা। সেই মতো রিসর্টের এক কর্মী ব্যাগ নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। তবে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পর অঙ্কিতাকে দেখতে পাননি তিনি।

১৩ ২০

অঙ্কিতাকে খুনের অভিযোগে উত্তাল উত্তরাখণ্ড। তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে বেআইনি ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে রিসর্টটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

১৪ ২০

তদন্তের মধ্যেই কেন রিসর্টটি ভেঙে ফেলা হল, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অঙ্কিতার পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, প্রমাণ লোপাট করতেই ওই রিসর্টটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।

১৫ ২০

অঙ্কিতার মৃত্যু নিয়ে সরগরম রাজনীতির ময়দানও। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা হরিশ রাওয়াতও অভিযোগ করেছেন, প্রমাণ লোপাট করতেই এই রিসর্ট ভাঙা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা পরিকল্পিত খুন।’’

১৬ ২০

শাসকদল বিজেপির নেতার ছেলে জড়িত বলে তদন্তপ্রক্রিয়ায় ঢিলেমি দেখিয়েছে পুলিশ, এমন অভিযোগও করেছে বিরোধীরা। যদিও এই ঘটনায় বিনোদ আর্য ও পুলকিতের ভাই অঙ্কিতকে দল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়েছে।

১৭ ২০

অঙ্কিতাকে খুনের ঘটনায় দোষীদের কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। এই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

১৮ ২০

অঙ্কিতা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয়দের দাবি, অঙ্কিতার মতো পুলকিতের ওই রিসর্টে কাজ করতেন আরও এক তরুণী। তিনিও রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন।

১৯ ২০

জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর নাম প্রিয়ঙ্কা। পাউরি জেলার ওই রিসর্টে কাজ করতে গিয়ে আট মাস আগে তিনি নিখোঁজ হন। তাঁর বাড়ি অঙ্কিতারই গ্রামে।

২০ ২০

অঙ্কিতার মতো প্রিয়ঙ্কারও কি একই পরিণতি হয়েছিল? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্তকারীদের মনে। প্রিয়ঙ্কার নিখোঁজ হওয়া প্রসঙ্গে পুলকিত দাবি করেছিলেন, ওই তরুণী রিসর্টের টাকা, মূল্যবান জিনিস নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। অনেকের ধারণা, অঙ্কিতা হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জাল আরও গভীরে ছড়িয়ে রয়েছে। তদন্ত চালালেই সেই রহস্যের জট খুলতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement