অনন্যা কুমারী অ্যালেক্স।
প্রথম রূপান্তরকামী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনে নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু কেরলে ভোট শুরু হওয়ার ৩ দিন আগে সরে এলেন বেঙ্গরা কেন্দ্রে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যাল জাস্টিস পার্টি (ডিএসজেপি)-র প্রার্থী অনন্যা কুমারী অ্যালেক্স। সমস্ত রকমের নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করে দিলেন তিনি। অনন্যার অভিযোগ, দলের লোকজনই লাগাতার হেনস্থা করছিলেন তাঁকে। এমনকি খুনের হুমকিও পাচ্ছিলেন।
২৮ বছরের অনন্যা কেরলের কোল্লামের বাসিন্দা। কেরলের প্রথম রূপান্তরকামী রেডিয়ো জকি তিনি। এ ছাড়াও সাজসজ্জা শিল্পী এবং সংবাদ পাঠিকা হিসেবে সাফল্যের একাধিক পালক রয়েছে তাঁর মুকুটে। সম্প্রতি ভোটের ময়দানেও অভিষেক ঘটে তাঁর। কিন্তু সাক্ষরতার হারে দেশের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা রাজ্যে নিরন্তর তাঁকে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমে অনন্যা বলেন, ‘‘বিরোধী শিবিরকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করতে আমার উপর চাপ দিচ্ছিলেন দলের নেতারা। বর্তমান সরকার এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পিকে কুনহালিকুট্টিকে নিন্দনীয় ভাষায় আক্রমণ করতে জোরাজুরি করছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রচারে পর্দার আড়ালে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই আমি। জানিয়ে দিই, এমন কিছুই করব না, যাতে আমার ব্যক্তিত্ব খর্ব হয়। তার পরই নানা ভাবে দলীয় নেতৃত্ব হেনস্থা করতে শুরু করেন আমাকে।’’
অনন্যার অভিযোগ, ‘‘ডিএসজেপি নেতৃত্ব আমাকে ভোটের কাজে ব্যবহার করছিলেন। নিজেদের স্বার্থেই আমাকে প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। প্রথমে বুঝতে পারিনি। আমার নিজের একটা মত রয়েছে, কোনও কিছুর বিনিময়েই তা সমর্পণ করব না। রূপান্তরকামীদের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতেই ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দলই বেঙ্গরা কেন্দ্রে নামার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ওঁদের কথা মতো চলতে রাজি না হওয়ায়, খুনের হুমকি দিতে শুরু করা হয়। পতিতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয় আমাকে। নানা ভাবে হেনস্থা করা হয়।’’
৬ এপ্রিল একটি দফাতেই কেরলের ১৪০ আসনে নির্বাচন। মনোনয়নপত্র তুলে নেওয়ার সময়সীমা যদিও পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সমস্ত প্রচার কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছেন অনন্যা। ভোটের ময়দানে আর কোনও ভাবেই দেখা দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এ বছর কেরলে মুখোমুখি লড়াই ক্ষমতাসীন সিপিআই নেতৃত্বাধীন লেফ্ট ডেমোক্র্যাটিক ফ্লন্ট (এলডিএফ) এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইডেট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউডিএফ) মধ্যে। তৃতীয় পক্ষে রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবির। বছর দুয়েক আগে, সংরক্ষণের বাইরে থাকা মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে মাথাচাড়া দেওয়া ডিএসজেপি-র কয়েক জন প্রার্থীকে ইতিমধ্যেই সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি। ডিএসজেপি থেকে বেরিয়ে আসাই এখন লক্ষ্য অনন্যার।