যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন। নিজস্ব চিত্র।
‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।’ সিপিএমের এই স্লোগান অতি পরিচিত। এ বার সেই সিপিএম শ্রমজীবী ক্যান্টিনকে ‘দীর্ঘজীবী’ করার কথা বলছে। শনিবার সিপিএমের যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিনের প্রথম বর্ষপূর্তি। করোনাকালে লকডাউন পরিস্থিতিতে শুরু হওয়া ক্যান্টিনের সেই বর্ষপূর্তির দিনেই শ্রমজীবী ক্যান্টিনকে স্থায়ী রূপ দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে সিপিএম।
করোনা মহামারির জেরে গত বছর লকডাউন শুরু হওয়ার পর গরীব, তথা খেটে খাওয়া মানুষের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরেই যাদবপুরের সিপিএম নেতৃত্বের উদ্যোগে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের জন্য নিখরচায় একটি ক্যান্টিন শুরু করার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের উদ্যোগেই যাদবপুর বিধানসভা এলাকার বিজয়গড়ে অস্থায়ী রান্নাঘর তৈরি করে কর্মহীন শ্রমিকদের খাওয়ানোর কাজ শুরু হয়। অল্প কয়েক দিনে রান্নাঘর ঘিরে শ্রমিক শ্রেণির সাড়া লক্ষ্য করে তা আরও বড় পরিসরে করার সিদ্ধান্ত নেন উদ্যোক্তারা। মূলত সিপিএমের ছাত্র-যুবদের ক্যান্টিনটি চলেছে বলেই দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। সেই ক্যান্টিনের শনিবার প্রথম বর্ষপূর্তি।
প্রথম যে দিন এই ক্যান্টিন শুরু হয়, সে দিন ১৫০ জনের খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু লকডাউনে পরিস্থিত এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, এক সময় ১৫০০ জন রান্না হত। লকডাউন শেষ হয়ে গেলেও এই ক্যান্টিনটি বন্ধ করেননি উদ্যোক্তারা। কিন্তু বর্ষপূর্তির দিনেই সেই ক্যান্টিনকে স্থায়ী রূপ দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। কলকাতা জেলা কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রথমে বিজয়গড়ে একটি রান্নাঘর করে খেটে খাওয়া গরীব মানুষদের পেটে ভাত দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু লকডাউনে সেই চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বড় ক্যান্টিন করতে হয়েছিল। কিন্তু আজ এক বছরে দাঁড়িয়ে আমাদের লক্ষ্য, এই ক্যান্টিনকে স্থায়ী রূপ দেওয়া। আগামী দিনে কোনও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ তৈরি না হলে আমরা এই ক্যান্টিন স্থায়ীভাবে চালিয়ে যাব।’’
শ্রমজীবী ক্যান্টিনে সব্যসাচী, সুজন চক্রবর্তী-সহ অন্যরা। নিজস্ব চিত্র।
শনিবার ক্যান্টিনের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সিপিএমের লাল পতাকার নিশানের কথা মাথায় রেখে লাল সালু দিয়ে প্যান্ডেল করা হয়। লাল চেয়ার টেবিলে বসে খাওয়ার আয়োজনও করা হয়েছিল। প্রথম দিন ১৫০ জন শ্রমজীবী মানুষের খাওয়ার বন্দোবস্ত নিয়ে শুরু হওয়া এই ক্যান্টিনে শনিবার ৬৫০ জনের খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। সতীর্থদের এমন উদ্যোগকে সমর্থন জানাতে হাজির হয়েছিলেন যাদবপুরের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী, কসবার প্রার্থী শতরূপ ঘোষ ও টালিগঞ্জের প্রার্থী দেবদূত ঘোষ, অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দন সেন-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তি।