—ছবি সংগৃহীত।
পেগাসাস-কাণ্ড নিয়ে ফের উত্তাল সংসদ। ফোনে আড়ি পাতা, নয়া কৃষি আইন, মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি একাধিক বিষয় নিয়ে বিরোধীদের আলোচনার দাবিতে সংসদের দুই কক্ষে কার্যত অচলাবস্থা অব্যাহত। স্পিকারের প্রতি অভব্য আচরণ এবং তাঁর দিকে বিবৃতির কাগজ উড়িয়ে হই-হট্টগোলের অভিযোগে সাসপেন্ড করা হতে পারে লোকসভার ৯ জন সাংসদকে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, যে ৯ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হতে পারে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন— গুরজিৎ সিংহ অজলা, টিএন প্রথাপন, মনিকাম ঠাকুর, রবনীত সিংহ বিট্টু, হিবি ইডেন, জোথিমানি, সেন্নিমালাই, সপ্তগিরি শঙ্কর উলাকা, ভি বৈথিলিঙ্গম, এএম আরিফ।
বিরোধী সাংসদদের হই-হট্টগোলের জেরে বুধবারও দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত লোকসভা এবং পৌনে তিনটে পর্যন্ত রাজ্যসভার অধিবেশন স্থগিত রাখা হয়। রাজ্যসভার অধিবেশন নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহের ‘মাস্টারস্ট্রোক’ আখ্যা দিয়ে টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘সংসদের উচ্চকক্ষে ১৫টি বিরোধী দলের প্রায় ১০০ জন সাংসদদের বক্তব্য কাটছাঁট করে সম্প্রচার করা হচ্ছে রাজ্যসভা টিভিতে।’’
রাজ্যসভায় বিরোধীদের চিৎকার-চেঁচামেচির বিরোধিতা করে ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহ বলেন, ‘‘মাস্ক না পরে এটা কী ধরনের ব্যবহার আপনাদের? অন্তত কোভিডবিধি মেনে চলুন।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং তৃণমূল সাংসদেরা সংসদের কাজে বাধা দিচ্ছেন। তাঁরা প্রতিবাদ দেখাতেই পারেন, কিন্তু তার একটা সীমা রয়েছে। তাঁরা স্পিকার, মন্ত্রীদের দিকে কাগজ ছুড়ে দিচ্ছেন। আলোচনা না করে বিরোধীরা পালাচ্ছেন কেন?’’
প্রসঙ্গত, পেগাসাস নিয়ে সংসদে বিরোধীদের কী রণকৌশল হওয়া উচিত, তা নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার সকালে কংগ্রেস, আপ, শিব সেনা-সহ ১৪টি বিরোধী দল বৈঠকে বসেছিল। সেই বৈঠকের পরই কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী-সহ অন্যান্য বিরোধী নেতারা একযোগে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। ফোনে আড়ি পাতা-কাণ্ড নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দেগে রাহুল বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের হৃদয়ে আঘাত করছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
জাতীয় নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, কৃষক-কল্যাণের মতো বিষয়ে আঘাত আনা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই একজোট হয়েছে বিরোধীরা, বললেন শিবসেনার রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। তাঁর কথায়, ‘‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে পেগাসাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে কেন্দ্র। এটা আমরা হতে দেব না। এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা চাই।’’