গ্রাফিক—শৌভিক দেবনাথ।
তৃণমূলের দৈনিক মুখপত্রে বুধবার একটি উত্তর সম্পাদকীয় স্তম্ভ লিখেছেন প্রয়াত সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়েছে। অজন্তা অবশ্য আপাতদৃষ্টিতে কোনও রাজনৈতিক নিবন্ধ লেখেননি। তাঁর নিবন্ধের বিষয় ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’। বুধবার লেখাটির প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার পরের কিস্তি প্রকাশিত হবে।
অজন্তা পেশাগত ভাবে অধ্যাপক। তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তৃণমূলের মুখপত্রে সে ভাবেই তাঁর পরিচয় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে ওই লেখার সঙ্গে যে ‘স্ট্র্যাপ’ ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে উল্লেখ রয়েছে ‘বাসন্তীদেবী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’। লেখার শিরোনামের উপরে বিষয় সংক্রান্ত পরিচিতিতে লেখা হয়েছে ‘প্রাক্ স্বাধীনতা পর্ব থেকে সাম্প্রতিককালের ইতিহাসের চালচিত্রে বাঙালি মহিলাদের অবদান’।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
প্রত্যাশিত ভাবেই সেই ‘অবদান’-এর প্রশ্নে মমতার নাম এসেছে। ইতিহাসের অধ্যাপক অজন্তা স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় নারীশক্তির আন্দোলন এবং অবদানের ইতিহাসের কথা লিখেছেন। তাঁর লেখায় নাম এসেছে বাসন্তীদেবীর সঙ্গেই ঊর্মিলাদেবী, সুনীতিদেবী, সরোজিনী নাইডু, মোহিনী দাশগুপ্তা প্রমুখের। প্রথম কিস্তিতে কোথাও মমতার নাম আসেনি। তবে পরের কিস্তিতে আসবে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল লোকজন।
ঘটনাচক্রে, সিপিএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের সঙ্গে মমতার চিরকালই রাজনৈতিক বৈরিতা তুঙ্গে থেকেছে। যদিও ব্যক্তিগত স্তরে তাঁদের মধ্যে কখনও সখনও কথা হয়েছে। কিন্তু মমতার সিপিএম-বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন রাজ্য সম্পাদক হিসেবে অনিলই ছিলেন শাসক সিপিএমের মূল চালিকাশক্তি। সেই সূত্রেই তৎকালীন বিরোধীনেত্রী মমতার সঙ্গে তাঁর কথার ঠোকাঠুকিও ছিল নিত্য এবং অহরহ।
অনিলের কন্যা অজন্তা।
কলেজ জীবনে বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অনিলের কন্যা অজন্তা অবশ্য কখনওই সে ভাবে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসেননি। মূলত লেখাপড়া এবং অধ্যাপনা নিয়েই ব্যস্ত থেকেছেন। তার পরে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপনায়। সেই অধ্যাপনার সূত্রেই তাঁর এই উত্তর সম্পাদকীয় স্তম্ভ বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু অজন্তার পিতার নাম অনিল বিশ্বাস এবং তাঁর লেখা বেরিয়েছে অধুনা শাসক তৃণমূলের দৈনিক মুখপত্রে এবং সে লেখার বিষয়ে মমতার উপস্থিতির কথা ঘোষিত, তাই বিষয়টি নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই কোলাহল তৈরি হয়েছে। এখন দেখার, পরের কিস্তিতে তিনি মমতা সম্পর্কে কী লেখেন!