কোন হরমোনের অভাবে হয় মূত্রনালির সংক্রমণ? ছবি- সংগৃহীত
হালের গবেষণা বলছে, ঋতুবন্ধ হবে বা হয়েছে এমন মহিলাদের মধ্যে মূত্রনালির সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তুলনামূলক ভাবে বেশি। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, মূত্রাশয়ে বিশেষ একটি ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি জানান দেয় ঋতুবন্ধের পর কাদের মূত্রনালির সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ‘স্কুল অফ ন্যাচারাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাথমেটিক্স’-এর সহকারী অধ্যাপক নিকোলে ডে নিসকো বলেন, “ইস্ট্রোজেন হরমোন শুধু মাত্র প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়াকলাপেও এই হরমোনের ভূমিকা রয়েছে। ঋতুবন্ধের পর, স্বাভাবিক নিয়মেই শরীর থেকে এই হরমোনের মাত্রা কমে যায়। তাই সমস্যা বাড়তে থাকে।”
স্ত্রীরোগ চিকিৎসকদের মতে, মেয়েদের যৌনাঙ্গে আর্দ্রতা বজায় রাখা, তার স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হল ইস্ট্রোজেন হরমোন। কিন্তু ঋতুবন্ধের পর শরীরে এই হরমোনের মাত্রা কমতে শুরু করলে আর্দ্রতাও কমতে শুরু করে। ‘ল্যাক্টোব্যাসিলাস’ নামক বিশেষ এই ব্যাক্টেরিয়াটির পরিমাণও কমে যায়।
বিশেষ এই ‘ল্যাক্টোব্যাসিলাস’ সঠিক মাত্রায় থাকলে, তার উপস্থিতিতে অন্যান্য খারাপ ব্যাক্টেরিয়াগুলি খুব একটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার উল্টোটাই হয়। এই হরমোনের প্রভাব কমতে শুরু করলে গোপনাঙ্গের পিএইচের ভারসাম্যও নষ্ট হয়। যা খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। পাশাপাশি মূত্রথলির পেশিও দুর্বল হয়ে পড়ে। সংক্রমণের পাশাপাশি প্রস্রাব ধরে রাখতেও সমস্যা হয়। এ ছাড়া অসুরক্ষিত যৌনজীবনও কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণের জন্য দায়ী।
এর থেকে মুক্তির উপায় কী?
সংক্রমণ থেকে বাঁচার এক মাত্র উপায় হল পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। নিয়মিত যৌনাঙ্গ, মূত্রাশয় এবং মলাশয় পরিষ্কার রাখা। কিন্তু সংক্রামিত হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া ছাড়া আর কোনও গতি নেই। এ ছাড়া ঋতুবন্ধের পর স্বাভাবিক নিয়মে ইস্ট্রোজেন ফিরে পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই বাইরে থেকে এই হরমোন দেওয়া ক্রিম বা কোনও ক্ষেত্রে হরমোন প্রতিস্থাপন চিকিৎসার উপর জোর দেন চিকিৎসকরা।