শিশুর শ্বাসের সমস্যা বেশি হলে কী করা উচিত প্রতীকী ছবি।
মুখ দিয়ে বেশির ভাগ সময়েই শ্বাস নেয় শিশু? ঘুমোতে গেলে শ্বাসকষ্ট হয়? সাধারণ সর্দিকাশি হলে শ্বাসনালিতে মিউকাস জমে হালকা শ্বাসের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু শ্বাসকষ্টের এই সমস্যা যদি লাগাতার হতে থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। অনেক শিশুরই অ্যালার্জি-জনিত সমস্যা থাকে। ঠান্ডা লেগে নাক-গলা বন্ধ হয়ে গিয়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আবার অনেক শিশুর জন্মগত ভাবে শ্বাসনালিতে ত্রুটি থাকে। নাক ও গলার সংযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। একে বলা হয় ‘কোয়ানাল অ্যাট্রেসিয়া’। তখন নাক দিয়ে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়।
শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের বক্তব্য, “শিশু মুখ দিয়ে কেন শ্বাস নিচ্ছে, শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হচ্ছে কি না, তা আগে বোঝা জরুরি। বাবা-মায়েরা যদি দেখেন, শিশু বেশির ভাগ সময়েই রাতে হাঁ করে ঘুমোচ্ছে, মুখ দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ”
ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণেও শ্বাসের সমস্যা ভোগাতে পারে শিশুকে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, সর্দিকাশির অ্যাডিনোভাইরাস বা আরএসভি ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হয় শিশুদের। আবার স্ট্রেপ্টোকক্কাস, স্ট্যাফাইলোকক্কাসের মতো ব্যাক্টেরিয়া বাতাসে বাহিত ধূলিকণার মাধ্যমে শরীরে ঢুকে ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তখন শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার নাকে টিউমার বা পলিপ হলেও স্বাভাবিক শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে।
বাবা-মায়েদের কী কী করণীয়?
১) ঘুমোনোর সময়ে শ্বাস নিতে সমস্যা, কাশি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ইনহেলার দিয়ে সাময়িক ভাবে কষ্ট কমলেও বেশি দেওয়া ঠিক হবে না।
২) নাক-কান-গলার সমস্যা থাকলে শিশুকে আইসক্রিম, কোনও রকম ঠান্ডা পানীয় দেবেন না।
৩) পর্যাপ্ত জল খাওয়াতে হবে শিশুকে। শরীরে যাতে জলশূন্যতা তৈরি না হয়, তা দেখতে হবে।
৪) শিশুর নাক টিকালো হওয়ার জন্য ছোট বয়স থেকেই নাকে জোরে জোরে মালিশ করেন অনেকে। এমন করলে নাকের ভিতরের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পরবর্তী সময়ে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৫) শিশুর ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে রাখবেন না। যদি তেমন ঘরে রাখতেই হয়, তা হলে তাপমাত্রা খুব বেশি কমানো চলবে না। পাঁচ বছরের নীচে শিশুর ঘরের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রির নীচে কখনওই রাখবেন না। পাঁচ বছরের বেশি বয়স হলেও তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির নীচে যেন না থাকে।
৬) স্নানের পরে অবশ্যই রোদে নিয়ে যেতে হবে শিশুকে। ভেজা চুলে শিশু যেন বেশি ক্ষণ না থাকে, তা খেয়াল রাখতে হবে।
৭) নাক বন্ধ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও রকম স্যালাইন ড্রপ বা স্টেরয়েড জাতীয় ন্যাজ়াল ড্রপ শিশুকে দেবেন না।