সঙ্গমের সময় ঠিক মতো পরিচ্ছন্নতা মেনে না চললে হনিমুন সিস্টিটিসের সমস্যা হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
নতুন নতুন বিয়ের পরই অনেক মহিলাই যোনিতে অস্বস্তি, প্রস্রাবে জ্বালার মতো সমস্যায় ভোগেন। বিয়ের পর পর উপভোগ করার বদলে যৌনতা ঘিরে তৈরি হয় আতঙ্ক। পরিস্থিতি হয়ে যায় বিরক্তিকর। বিয়ের পর অনেক মেয়েই এই সমস্যায় ভোগেন। সাধারণত মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে এই সমস্যা দেখা দেয় বলে একে ‘হনিমুন সিস্টিটিস’ বলা হয়। এটি আদতে এক প্রকার ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ বা ইউটিআই। সঙ্গমের সময়ে এসকেরিয়া কোলি ব্যাক্টেরিয়া ইউরেথ্রা দিয়ে ব্লাডারে পৌঁছয়। যোনির আশপাশেও পৌঁছয় কিছু পরিমাণে। এর ফলে ইউরিনারি ট্র্যাক্টে ইনফেকশন হয়। ৩০ শতাংশ মহিলা এই সমস্যায় ভোগেন। মহিলারা এই সমস্যায় বেশি ভুগলেও ছেলেদের যে একেবারেই হয় না, এমনটা নয়।
সঙ্গমের ঠিক মতো পরিচ্ছন্নতা মেনে না চললে হনিমুন সিস্টিটিসের সমস্যা হতে পারে। তাই পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে জরুরি। দু’জনেই পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দিন। খুব সমস্যা হলে ওই সময়ে কিছু দিন মিলন থেকে বিরত থাকুন। সমস্যা কমে গেলে নিয়মিত মিলন করতে পারেন। হঠাৎ এই ধরনের সমস্যা হলে অনেক সময়ই মহিলারা বড়সড় কোনও কিছুর আশঙ্কা করে ভয় পান। সম্বন্ধ করে বিয়ে হলে স্বামীর সঙ্গে বন্ধুত্ব না থাকায় সমস্যার কথা খুলে বলতেও লজ্জা পান। সঙ্গম যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠলেও মুখে কিছু বলেন না। চিকিৎসকদের মতে, এতে ভয় বা লজ্জার কিছু নেই। এই সমস্যা খুবই স্বাভাবিক। একটু সাবধান থাকলেই সেরে যাবে। লজ্জা না পেয়ে তাই সঙ্গীকে খোলাখুলি জানান আপনার সমস্যার কথা। সংবেদনশীল ভাবে দু’জনে মিলে সমাধান করুন।
কোন কোন উপসর্গ দেখে সতর্ক হবেন?
১) প্রস্রাবে জ্বালা:
খেয়াল রাখুন জ্বালা যোনির ভিতরে হচ্ছে, না কি সঙ্গমের সময় অতিরিক্ত ঘর্ষণের প্রভাবে বাইরের অংশে সাধারণ জ্বালা হচ্ছে।
২) যোনিতে দুর্গন্ধ।
৩) ঘোলাটে প্রস্রাব।
৪) পেটে তীব্র যন্ত্রণা, শ্রোণির হাড়ে খিঁচ।
৫) কারও কারও ক্ষেত্রে সংক্রমণের কারণে জ্বরও আসে।
৬) প্রস্রাব করার পরও মনে হয় প্রস্রাবের বেগ আসছে।
হনিমুন সিস্টিটিস হলে কী করবেন?
১) এমন সমস্যা হলে প্রচুর জল খেতে হবে। ক্র্যানবেরি জুস খেলেও উপকার পাবেন।
২) তেল মশলাযুক্ত খাবার, ভাজাভুজি, অ্যালকোহল, সোডা, মিষ্টি পানীয়, কফি খাওয়া এড়িয়ে চলুন। অ্যাসিডযুক্ত ও প্রোটিন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন কিছু দিন।
৩) পেটের অংশে ব্যথা কমানোর জন্য হট ওয়াটার ব্যাগ বা গরম জলে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে সেঁক দিতে পারেন। ব্যথা বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পেনকিলার খেতে পারেন।
৪) সঙ্গম করার পর প্রস্রাব করে নিন, শরীরের ব্যক্টেরিয়া বেরিয়ে আসবে।
৫) সংক্রমণ বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে পারেন।