Fainting Treatment

চলতে-ফিরতে মাথা ঘুরছে, চোখের সামনে অন্ধকার, হঠাৎই জ্ঞানশূন্য! কেন হয়? প্রতিকার কিসে?

মাথা ঘোরা ও জ্ঞান হারানোর সমস্যা যদি ঘন ঘন হতে থাকে, তা হলে সাবধান! নিজে থেকে মুঠো মুঠো মাথা ঘোরার ওষুধ কিনে খাবেন না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৪ ১৭:০৩
Share:

কেন জ্ঞান হারাচ্ছেন বার বার, চিকিৎসা কী। ছবি: ফ্রিপিক।

রাস্তায় হাঁটছেন। হঠাৎই অনুভব করলেন, মাথা ঘুরছে। আচমকাই চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গেল। তার পর আর কিছু মনে নেই আপনার। পরে জানলেন যে, কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। অফিসে একটানা বসে কাজ করতে করতেও এমন হয় অনেকের। মনে হয় চারপাশটা দুলে উঠল। প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণার সঙ্গে মাথাও ঘুরছে বলে মনে হয়। এই সমস্যা যদি ঘন ঘন হতে থাকে, তা হলে চিন্তার ব্যাপার রয়েছে। কারণ, মাথা ঘোরা, আচমকা জ্ঞান হারানোর মতো উপসর্গ বহু জটিল রোগের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। তাই সময় থাকতে সতর্ক হওয়া দরকার। প্রয়োজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

Advertisement

আচমকা মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন—

১) মস্তিষ্কের একটি অংশে কয়েক সেকেন্ডের জন্য রক্ত চলাচল কমে গেলে ‘ব্ল্যাকআউট’ হতে পারে বা জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারেন। স্নায়বিক সমস্যা থাকলে তার থেকেও এমন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

Advertisement

২) হৃদ্‌যন্ত্রের অসুখ থাকলে অথবা হার্ট থেকে মস্তিষ্কে রক্তবাহী ধমনীতে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধলে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি মাথা ঘোরা ও জ্ঞান হারানোর সমস্যা ঘন ঘন হতে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, হৃদ্‌যন্ত্রে কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে। দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৩) চলতে-ফিরতে মাথা ঘুরলে মোশন ভার্টিগো হয়। এক রকমের মাইগ্রেন থেকে এমনটা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের চিকিৎসা করতে হবে।

৪) মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা হলে অথবা শরীরের রক্তচাপের হেরফের হলে তার থেকেও এমন হতে পারে। হাইপারটেনশন বাসা বাঁধলে তার পূর্বলক্ষণ কিন্তু এমনই হতে পারে।

৫) হার্টে যদি অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়, অথবা শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়, তখন তার থেকে এমন হতে পারে।

৬) স্ট্রোক কখন হানা দেবে, তা বলা সম্ভব নয়। হঠাৎ দেহ টলে ওঠা, মাথা ঝিমঝিম করা, ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়া এই রোগের লক্ষণ। আচমকা মাথা ঘুরে জ্ঞান হারানো, শরীরের এক পাশ অসাড় হয়ে যাওয়াও কিন্তু স্ট্রোকের আগাম সঙ্কেত হতে পারে।

৭) রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা কমে গেলেও মাথা ঘুরতে পারে। আবার রক্তে যদি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে, তার থেকেও এমন উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

প্রতিকারের উপায় কী?

১) বিশ্রাম নিতেই হবে। রাতে টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ঘুমোনোর আগে কানে হেডফোন গুঁজে উচ্চস্বরে গান শুনলে বা অন্ধকার ঘরে টানা মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করলে, মস্তিষ্কে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য।

২) মাথা ঘোরার ওষুধ বেশি খাবেন না। খুব দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এক দিন বা দু’দিন খাওয়া যেতে পারে। টানা এমন ওষুধ খেতে থাকলে শরীরের ভারসাম্যই নষ্ট হয়ে যাবে। তখন আর ওষুধ ছাড়া চলতে-ফিরতে পারবেন না।

৩) মদ্যপান, ধূমপানে রাশ টানতে হবে। অতিরিক্ত নেশার প্রকোপ মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর উপরে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

৪) একটানা কাজ না করে বিরতি নিন। মাথা নিচু করে কাজ করবেন না, কাজের সময়ে মাথা সোজা রাখুন। তবে বেশি দিন সমস্যা বজায় থাকলে চিকিৎসককে দেখিয়ে নিতে হবে। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে মাল্টিপল স্কেলোরোসিস বা মস্তিষ্কের টিউমার থেকেও মাথা ঘোরে।

৫) সুষম আহার করতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। বেশি তেল-মশলা দেওয়া খাবার, ভাজাভুজি এড়িয়ে চলুন। খুব বেশি মিষ্টি দেওয়া খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস, নরম পানীয় খাবেন না। ঘন ঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যাসও ছাড়তে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement