পেটের গণ্ডগোল থেকে বাঁচবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত
সারা পৃথিবীর মানুষই পেটের সমস্যায় ভোগেন। আমেরিকার মেয়ো ক্লিনিকের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, পেটের সমস্যা বা ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম’(আইবিএস)-এর মূল কারণ লুকিয়ে আছে কিছু খাবারদাবারে। এর মধ্যে রয়ে দুধ, চিজ, বিশেষ ধরণের ডাল, গম (বিস্কুট, রুটি, পাউরুটি ইত্যাদি), রাই, কৃত্রিম মিষ্টির খাবার এবং কোলা জাতীয় পানীয়।
এসব পেটব্যথা, গ্যাস, অম্বল, পেট খারাপ ও কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা চলতেই থাকে। আমেরিকায় প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ আইবিএস-এ ভোগেন। আমাদের দেশের এরকম কোনও পরিসংখ্যান না থাকলেও, প্রচুর মানুষ এর শিকার।
কী ভাবে এই রোগের হাত থেকে বাঁচা যাবে? উত্তর দিলেন গ্যাসট্রোএন্টেরোলজিস্ট চিকিৎসক কর্মবীর চক্রবর্তী।
প্রশ্ন: নাগাড়ে হজমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি বা পেটব্যথা হলে কি আইবিএস পরীক্ষা করানো উচিত?
উত্তর: আইবিএস-এর কোনও নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই। প্রায়শই পেটব্যথা, ক্র্যাম্প, লাগাতার হজমের সমস্যা, কখনও কোষ্ঠকাঠিন্য এর পরেই ডায়রিয়া, বদহজম— এইসব সমস্যা দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। পেটের অন্যান্য কিছু অসুখেও একই ধরণের উপসর্গ দেখা যায়। তাই ‘কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট’ (সিবিডি), মলপরীক্ষা, কোলনোস্কোপি, এন্ডোস্কোপির মতো কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষা করানো হয়। তাতে বোঝা যায়, অ্য কোনও অসুখ আছে কি না। তার পরই আইবিএস-এর চিকিৎসা শুরু হয়।
প্রশ্ন: মানসিক চাপ থাকলে কি এই সমস্যা বাড়ে?
উত্তর: এই অসুখের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না থাকলেও, দেখা গিয়েছে যাঁরা দীর্ঘদিন এই সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের ৪০–৬০ শতাংশ অবসাদ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ বা মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। আইবিএস-এ কোলন বা অন্ত্র মস্তিষ্ককে ভুল খবর পাঠায় বলেই গোলমাল হয়। এই অসুখের অন্য নাম স্প্যাসটিক বা ইরিটেবল কোলন।
পেটের সমস্যা কমাতে কী কী খাবেন? আর কী কী বাদ দেবেন?
প্রশ্ন: আইবিএস কি সারে না?
উত্তর: সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাত্রায় কিছু বদল এনে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। খাবারের ব্যাপারে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
প্রশ্ন: কী কী নিয়ম মানতে হবে?
উত্তর: দুধ ও গম জাতীয় খাবার খেলে পেটব্যথা বাড়ে। এ ছাড়া এক এক জনের এক এক রকম খাবারে সমস্যা হতে পারে। কারও পোস্ত খেলে সমস্যা হয়, কারও আবার নারকেল, চিনি, মুসুর ডাল। খেয়াল রেখে সেই খাবার বন্ধ রাখতে হবে। এ ছাড়া ক্যাফিন ও কোলা জাতীয় পানীয় বাদ দিলে ভাল। প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরচর্চা করা জরুরি। একসঙ্গে বেশি খাবার না খেয়ে ছোট ছোট মিলে খাওয়া উচিত।