বহু শিশুর প্রাণ বাঁচাতে পারে এই উদ্যোগ।
জন্মের পর শিশুর পৃথিবীতে আসার পর স্তন্যদানই হল প্রকৃতির সেই বিস্ময়কর প্রক্রিয়া৷ যার মাধ্যমে তার খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তাকে নানা রোগব্যাধির হাত থেকে রক্ষা দিতেও স্তনদুগ্ধের কোনও বিকল্প নেই। অনেক শিশুই মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। সেই সব পরিস্থিতিতে পরিত্রাতার ভূমিকা নিতে পারে ‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্ক’।
নেপালের কাঠমাণ্ডুতে এই প্রথম চালু হল মাতৃদুগ্ধ ব্যঙ্কিংয়ের ব্যবস্থা। নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি পরোপকার প্রসূতি ও মহিলা হাসপাতালে ‘অমৃত কোষ’ নামক এই ব্যাঙ্কের উদ্বোধন করেন ১৯ আগস্ট।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে সেখানে নিরাপদে স্তনদুগ্ধ সংগ্রহ, পাস্তুরাইজ পরীক্ষা, সংরক্ষণ এবং প্রয়োজন অনুসারে শিশুদের সরবরাহ করার সুবিধা থাকবে। নেপাল সরকার এবং ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে এই ব্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে।
প্রতীকী ছবি
‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্ক’ আদতে কী?
যে সব মহিলা স্তন্যদুগ্ধ দানে ইচ্ছুক, তাঁদের কাছ থেকে দুগ্ধ সংগ্রহ করা হয় ‘ব্রেস্ট পাম্প’ ব্যবহার করে। তবে তার আগে বেশ কিছু পরীক্ষা করা হয়৷ তার পর দুধ সংগ্রহ করা হয়। জন্মের সময় যে শিশুদের ওজন কম থাকে, বা যারা নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেয়, কিংবা জন্মের পরবর্তী সময় যাদের নানা শারীরিক জটিলতা থাকে, তাদের জন্য এই ব্যাঙ্ক ভীষণ জরুরি। এমনটাই জানালেন পরোপকার হাসপাতালের ডিরেক্টর চিকিৎসক আমির বাবু শ্রেষ্ঠা।
কারা স্তন্যদুগ্ধ দান করতে পারেন?
ইচ্ছুক মায়েরা যাদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং সিফিলিস রোগ নেই, তাঁরা স্তন্যদুগ্ধ দান করতে পারেন। যে মায়েদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১০ গ্রাম বা তার বেশি এবং যাঁরা কোনও গুরুতর রোগে আক্রান্ত নন, কেবল তাঁরাই স্তন্যদুগ্ধ দিতে পারেন।
শিশুদের জন্য মাতৃদুগ্ধ পুষ্টির দারুণ উৎস। মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে এর কোনও বিকল্প নেই। এতে থাকে নানা রকম অ্যান্টিবডি, যা অন্য কোনও উৎস থেকে পাওয়া যায় না। সব শিশু যদি মাতৃদুগ্ধ পায়, তা হলে বিশ্ব জুড়ে পাঁচ বছরের নীচে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১৩ শতাংশ কমে যাবে।