অজানা জ্বরে মৃত্যু জম্মুতে। প্রতীকী ছবি।
অজানা জ্বরের আতঙ্ক ছড়িয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। এর জেরে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। মৃতদের মধ্যে ১০ জন শিশু। জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অনেকে। কী ধরনের সংক্রমণ ঘটেছে, তা এখনও জানা যায়নি। আক্রান্তদের থুতু-লালার নমুনা পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, রবিবার জম্মুর রাজৌরি জেলায় দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। অজানা জ্বরেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়। শনিবার একই পরিবারের ৬ জন শিশুকে জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তার মধ্যে বছর পাঁচেকের এক শিশুকন্যার শারীরিক অবস্থা ছিল সঙ্কটজনক। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছিল সে। রবিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। এর পর একে একে আরও অনেক শিশুর মৃত্যুর খবর আসতে থাকে রাজৌরির বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে। মহম্মদ ইউসুফ নামে এক প্রবীণেরও মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। সব মিলিয়ে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
জম্মুর সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, এসএমজিসি হাসপাতাল-সহ রাজৌরির কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও ভর্তি রয়েছেন অনেকে। সংক্রামক রোগ বিষয়ক চিকিৎসক আশুতোষ গুপ্ত জানান, আক্রান্তদের মধ্যে জ্বর, সর্দি-কাশি, বমি ভাব, শরীরে জলশূন্যতার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। প্রচণ্ড ঘাম হচ্ছে রোগীদের, অনেকেই ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে শিশু ও প্রবীণদের সংখ্যাই বেশি।
রাজৌরির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনোহর লাল জানিয়েছেন, রাজৌরির ঘরে ঘরে নমুনা পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। যে সব এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেখানে লোকজনের থুতু-লালার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পানীয় জলের নমুনাও পরীক্ষা করা হচ্ছে। জল ও খাবার থেকে রোগ ছড়িয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপৎকালীন অবস্থা তৈরি হলে তার জন্য হাসপাতালগুলিকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। নতুন মেডিক্যাল টিম তৈরি হয়েছে।
প্রাথমিক পরীক্ষায় অনুমান করা হচ্ছে, কোনও ভাইরাসেরই সংক্রমণ ঘটেছে। কী ধরনের ভাইরাস, তা পরীক্ষার জন্য রোগীদের থেকে সংগৃহীত নমুনা পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে। দিল্লির এইমস্ ও ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল (এনসিডিসি) থেকে আসা চিকিৎসক দল জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে রোগীদের পরীক্ষা করে দেখছে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাঁচার জন্য বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া তাদের জীবনচক্র, জিনের গঠন এমন ভাবে বদলে নিচ্ছে, যার নাগাল পেতে অনেক দেরি হচ্ছে। ফলে চিকিৎসা শুরুর আগেই মৃত্যু হচ্ছে রোগীর।
গত বছর ডিসেম্বরেও এমনই এক সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলায়। একই পরিবারের মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অনেকে।