পোষ্যের শরীরে কী ভাবে ছড়াচ্ছে সুপারবাগস্, কী ভাবে রোগ প্রতিরোধ করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব জুড়েই সচেতনতার প্রচার চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ইতিমধ্যেই সতর্ক করে জানিয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিকেও ধ্বংস হয় না এমন ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এই ধরনের ব্যাক্টেরিয়া প্রাণঘাতী হতে পারে, নতুন অতিমারির কারণও হয়ে উঠতে পারে। এই সব জীবাণুকে বলা হয় ‘সুপারবাগস্’। সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, এই ধরনের সুপারবাগস্ নাকি পোষা কুকুরের শরীরেও বাসা বাঁধছে। আর কুকুর থেকে মানুষের শরীরে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।
পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা দাবি করেছেন, সালমোনেল্লার মতো সুপারবাগসে্র খোঁজ পাওয়া গিয়েছে কুকুরের শরীরেও। ‘জ়ুনসিস অ্যান্ড পাবলিক হেল্থ’ নামক বিজ্ঞানপত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে। গবেষক এরিকা গ্যান্ডা জানিয়েছেন, সালমোনেল্লার মতো ব্যাক্টেরিয়া পশুর শরীরে বাসা বাঁধছে এবং বংশবিস্তার করে সংখ্যায় বেড়েও চলেছে। সালমোনেল্লা আক্রান্ত কুকুরের সংস্পর্শে থাকলে, মানুষের শরীরেও জীবাণু সংক্রমণ হবে খুব দ্রুত।
পোষা কুকুরের শরীরে কী ভাবে সুপারবাগস্ বাসা বাঁধছে সে নিয়ে গবেষণা চলছে। পেন স্টেটের আরও এক গবেষক সোফিয়া কেনি জানিয়েছেন, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ হলে, পোষ্যকে ঠিকমতো প্রতিষেধক না দেওয়া অথবা তাদের ঠিক মতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখলে সে থেকেও ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায়, মানুষের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমোচ্ছে পোষা কুকুর অথবা আদর করার সময়ে নাক-মুখ চেটে দিচ্ছে। তাদের থুতু-লালা, গায়ের লোম অথবা মলমূত্র থেকে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে পারে। তাই সব সময়েই পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
এমন জায়গায় পোষ্যের বিছানা রাখুন যেখানে আলো-হাওয়া চলাচল করে। ভিজে, স্যাঁতসেঁতে জায়গায় ওকে রাখবেন না। বাইরে থেকে এসেই পোষ্যের গায়ে হাত দিয়ে আদর করবেন না। আগে নিজে পরিষ্কার হয়ে নিন, তার পর ওকে ধরবেন। হাত ভাল করে স্যানিটাইজ় করে তবেই পোষ্যের কাছে যাবেন। পোষ্যকে ভাল করে স্নান করাতে হবে। ছত্রাক এবং পরজীবীর সংক্রমণ রোখার জন্য শ্যাম্পু দিয়ে কুকুরকে স্নান করাতে পারেন। তবে কী ধরনের শ্যাম্পু আপনার পোষ্যের জন্য কিনবেন, তা পশু চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন। কুকুরকে নিয়ে যখন হাঁটতে বেরোবেন, তখন কর্দমাক্ত জায়গা বা জলে ডোবা জায়গা এড়িয়ে চলুন। বাড়ি ফিরে আসার পর কুকুরের থাবাগুলি জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে দেবেন, যাতে ময়লা লেগে না থাকে। পোষ্যের গলায় যদি বেল্ট পরানোর কলার থাকে, তা হলে সেটি খুলে পরিষ্কার করুন। সব সময়ে ‘কলার’ না পরিয়ে রাখাই ভাল। কারণ ‘কলার’ পরিয়ে রাখা জায়গায় পরজীবীর সংক্রমণ আগে হতে পারে। পানীয় জলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ভাবে সাবধান থাকতে হবে। জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খেতে দিন পোষ্য কুকুরকে।