HMPV Infections

নিউমোনিয়ার টিকা কি এইচএমপিভি সংক্রমণ ঠেকাতে পারবে? সমীক্ষায় কী জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা

এইচএমপিভি নতুন না হলেও, এই ভাইরাসকে ঠেকানোর মতো প্রতিষেধক এখনও তৈরি হয়নি। তবে যে হেতু এই ভাইরাসের সংক্রমণে সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ও নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তাই নিউমোনিয়ার প্রতিষেধকে একে রোখা সম্ভব কি না তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৩০
Share:

নিউমোনিয়ার প্রতিষেধকে কি এইচএমপিভিকে কাবু করা সম্ভব? ফাইল চিত্র।

অনেকটা কোভিডেরই মতো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভারতেও এই ভাইরাসের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যদিও ভাইরাসের সংক্রমণে জটিল কোনও অসুখ হতে দেখা যায়নি, তা সত্ত্বেও চিন্তা বাড়ছে। বিশেষ করে বয়স্ক ও পাঁচ বছরের নীচের শিশু, যাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁরাই রয়েছেন ঝুঁকিতে। এইচএমপিভি নতুন না হলেও, এই ভাইরাসকে ঠেকানোর মতো প্রতিষেধক এখনও তৈরি হয়নি। তবে যে হেতু এই ভাইরাসের সংক্রমণে সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ও নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তাই নিউমোনিয়ার প্রতিষেধকে একে রোখা সম্ভব কি না তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

Advertisement

দেশের নানা জায়গায় চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, কেবল নিউমোনিয়ার টিকায় এইচএমপিভি ভাইরাসকে ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে ভাইরাসের সংক্রমণে যে সব রোগ দেখা দিচ্ছে, তার তীব্রতা কমানো সম্ভব।

সেটা কী ভাবে? মুম্বইয়ের খারঘরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক অমিত ঘবাড়ে জানিয়েছেন, নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণ। এই রোগে ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষে‌ত্রে জলও জমতে পারে। ফুসফুস এমনিতে স্পঞ্জের মতো, কিন্তু নিউমোনিয়া হলে ফুসফুস ক্রমশ কঠিন হয়ে শুরু করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় ‘কনসলিডেশন’। এক্স রে করলে সাদা দেখতে লাগে। এইচএমপিভির সংক্রমণ হলেও ফুসফুসই সবচেয়ে আগে আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়ার মতোই লক্ষণ ফুটে ওঠে। নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হল জ্বর। তার সঙ্গে কাশি। পাশাপাশি, শ্বাসকষ্টও থাকে। সংক্রমণ যত বাড়ে, শ্বাসকষ্টও বাড়তে থাকে। শ্বাস নেওয়ার সময়ে বুকে ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া, মাথায় যন্ত্রণা, ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়ায় অনীহা, সারা ক্ষণ বমি বমি ভাবও আনুষঙ্গিক লক্ষণের মধ্যে পড়ে। এইচএমপিভি সংক্রমণের ক্ষেত্রেও তেমনই হচ্ছে বলে দেখা গিয়েছে। তাই নিউমোনিয়ার টিকা দেওয়া থাকলে, ফুসফুসের জটিল অসুখের আশঙ্কা কমবে বলেই আশা করা হচ্ছে।

Advertisement

নিউমোনিয়ার দু’রকম টিকা আছে— নিউমোকক্কাল কনজ়ুগেট ভ্যাকসিন (পিসিভি) এবং নিউমোকক্কাল পলিস্যাকারাইড ভ্যাকসিন (পিপিএসভি)। পিসিভি টিকা শিশু ও বয়স্কদের জন্য। আর পিপিএসভি টিকা তাঁদেরই দেওয়া হয়, যাঁদের বয়স ষাট পেরিয়েছে এবং ফুসফুস দুর্বল বা সিওপিডি, হাঁপানির মতো রোগ বা অন্য কোনও জটিল অসুখ রয়েছে। ফরিদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট রবি শেখর ঝা জানিয়েছেন, পিসিভি ও পিপিসিভি টিকা যদি আগে থেকে দিয়ে রাখা হয়, তা হলে শিশু ও বয়স্করা অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবেন। এইচএমপিভি ভাইরাস শরীরে ঢুকলেও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে।

শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকায় উপযুক্ত আবহাওয়া পেয়ে নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া কিংবা ভাইরাস আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এইচএমপিভি ভাইরাসও তেমনই। আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচি থেকে এই রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে। একে ‘ড্রপলেট ইনফেকশন’ বলা হয়। চার বছর বা তার কম বয়সের শিশু এবং ষাট বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের ব্যক্তিদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই সে ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার টিকার পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক বা ‘ফ্লু ভ্যাকসিন’ নিয়ে রাখলেও বিপদের ঝুঁকি কমতে পারে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement