যোগাসন করার অভ্যাস এমনিতেই খুব স্বাস্থ্যকর। ছবি: সংগৃহীত
ডায়াবিটিস নিয়ে নাজেহাল মানুষের সংখ্যা কম নয়। ডায়াবিটিসের কারণ হল শরীরে ইনসুলিন হরমোনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব। এই রোগের হাত ধরেই উচ্চ রক্তচাপ, খারাপ কোলেস্টেরল, স্থূলতার মতো সমস্যার রমরমা। এক রোগের হাত ধরে শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক জটিল রোগ। তবে কায়িক পরিশ্রম কম করা, অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে এই রোগ অসময়ে কড়া নাড়ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনতে পারলেই এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যোগাসন করার অভ্যাস এমনিতেই খুব স্বাস্থ্যকর।
যোগাসন করার অভ্যাস এমনিতেই খুব স্বাস্থ্যকর। ছবি: সংগৃহীত
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যায়াম হতে পারে অন্যতম ভরসা। ইনসুলিন পরিমাণ কমাতেও শরীরচর্চা ভূমিকা অনবদ্য। ব্যায়াম, যোগাসন করার অভ্যাস এমনিতেই খুব স্বাস্থ্যকর। ‘নেদারল্যান্ডসের এপিডেমিয়োলজি অফ ওবেসিটি’ (এনইও)-র করা একটি সমীক্ষা তেমনটাই জানাচ্ছে। টাইপ ২ ডায়াবিটিসে যাঁরা ভুগছেন, সুস্থ থাকতে তাঁদের অতি অবশ্যই শরীরচর্চা করা জরুরি। নয়তো শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল হবে। তবে কত ক্ষণ ব্যায়াম করছেন, সেটাও খেয়াল করা জরুরি। শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারা সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি। তেমনটাই জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। গ্লুকোজের পরিমাণ কমানো ছাড়াও ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যায়াম আরও নানা ভাবে সাহায্য করে। পেশি শক্তিশালী করে তোলে। ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে রক্তচলাচল সচল রাখাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দিনের কোন সময়ে ব্যায়াম করলে ডায়াবিটিস হাতের মুঠোয় থাকবে?
ডায়াবিটিসের রোগীদের সকালের চেয়ে দুপুর ২টো থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে ব্যায়াম করা ভাল। সকালের তুলনায় সন্ধ্যায় শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। ডায়াবিটিস রোগীদের সন্ধ্যায় ব্যায়াম করলে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল থাকে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণও কম থাকে। এ ছাড়া, সন্ধ্যার সময়ে শরীরচর্চা করলে এন্ডোরফিন হরমোন বেশি উৎপন্ন হয়। যা দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে মানসিক উদ্বেগও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ডায়াবিটিস রোগীদের সকালে ব্যায়াম করার কিছু অসুবিধা রয়েছে। ডায়াবিটিস থাকলে বেশি ক্ষণ না খেয়ে থাকা ঠিক নয়। এতে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। সকালে শরীরচর্চা করার এই একটা অসুবিধা ডায়াবেটিকদের ক্ষেত্রে। তার চেয়ে সারা দিনের খাওয়াদাওয়ার পর খানিকটা হজম করে তার পর শরীরচর্চা করুন। এতে দ্রুত ক্যালোরিও পুড়ে যায়। তবে খুব বেশি ব্যায়াম একসঙ্গে করার দরকার নেই। প্রতি দিন ৫-১০টি ব্যায়াম করতে পারেন। তার বেশি করলে সমস্যা হতে পারে। তবে যা-ই করুন, তা ধারাবাহিক ভাবে করতে হবে। নয়তো কোনও সুফল মিলবে না।