আচমকা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা দুর্ঘটনা ঘটলে কী করা দরকার? —প্রতীকী ছবি।
অফিস থেকে বাড়ি, পথেঘাটে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। আচমকা কোনও দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। চোখের সামনে কাউকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখলে, লোকজন ভিড় করলেও, বুঝে উঠতে পারেন না, কী করণীয়? সেই সময়, নানা মুনির নানা মতে রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতেই দেরি হয়ে যায়। তাতেই কিন্তু বিপদ ঘটে যেতে পারে।
পরিস্থিতিতে নজর
আচমকা কারও বুকে ব্যথা শুরু হতে পারে, কেউ প্রবল ঘামতে ঘামতে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন, বাড়িতে শিশু থাকলে আচমকা পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে যেতে পারে, পথেঘাটে পড়ে গিয়ে কেউ প্রচণ্ড ব্যথা পেতে পারেন, হাড় ভেঙে যেতে পারে। যে কোনও পরিস্থিতিতেই জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। প্রথমেই রোগীর দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। উপসর্গ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাহায্যের জন্য ফোন
আপাৎকালীন চিকিৎসা পরিষেবার জন্য হেল্প লাইন নম্বর, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফোন নম্বর, অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বর, পুলিশের নম্বর সঙ্গে রাখা ভাল। রাস্তাঘাটে কারও বিপদ-আপদ হলে দ্রুত হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। এক দিকে রোগীর যেমন খেয়াল রাখতে হবে, তেমনই অন্য দিকে দ্রুত তাঁকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষত যদি কারও বুকে ব্যথা হয়। এ ক্ষেত্রে যত দ্রুত রোগীকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া যাবে, ততই ভাল।
প্রাথমিক চিকিৎসা
লক্ষণ অনুযায়ী প্রাথমিক চিকিৎসা জরুরি। যেমন কারও হাঁপানি থাকলে বা আচমকা টান উঠলে, প্রথমেই সেই জায়গাটা ফাঁকা করে দিতে হবে। লোকজনের ভিড়ে আরও কষ্ট হতে পারে তাঁর। সেই ব্যক্তির কাছে ইনহেলার আছে কি না জেনে তাঁর হাতের কাছে দেওয়া প্রয়োজন। আবার অফিসে বা বাড়িতে বা রাস্তায় পড়ে গিয়ে গভীর চোট পেলে, বা কোন স্থান দ্রুত ফুলে গেলে সেখানে ঘষাঘষি না করাই ভাল। বরফ বা ঠান্ডা জল দেওয়া যেতে পারে। শিশু হোক বা প্রাপ্তবয়স্ক, রাস্তায় পড়ে গিয়ে গভীর ক্ষত তৈরি হলে, পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান চেপে আগে রক্ত বন্ধ করা দরকার। তার পর দ্রুত স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। বুকে ব্যথা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই জায়গাটি ফাঁকা করে দিতে হবে। ঘামতে থাকলে জামার বোতাম খুলে দিয়ে হাওয়া করা প্রয়োজন। চিকিৎসকের কাছে পৌঁছনোর আগে তাঁকে যথাসম্ভব আরাম দেওয়া দরকার।
ক্ষতি থেকে রক্ষা
কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসায় ভুল হলে বড় ক্ষতি হতে পারে। যেমন যদি কেউ পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডে আঘাত পেলে তাঁকে নিয়ে বেশি এদিক-ওদিক করা উচিত নয়। বা কারও হা়ড় ভাঙলে, ব্যথার সেই অংশ টিপে দেখতে গিয়ে আরও বিপদ ঘটতে পারে। পুড়ে গেলে মাজন দেওয়ার বদলে, সেই জায়গায় ঠান্ডা জল দেওয়া দরকার। আঘাত লেগে রক্তপাত হলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চেপে ধরেই রক্ত বন্ধের চেষ্টা করতে হবে। সেই সময় নোংরা রুমাল চেপে ধরলে সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হবে।
তথ্য সংগ্রহ
রাস্তাঘাটে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা দুর্ঘটনা ঘটলে সেই মানুষটির জ্ঞান থাকাকালীন চেষ্টা করতে হবে, বাড়ির লোকের ফোন নম্বর, নাম-ধাম জেনে নেওয়ার। তিনি কোথায় যাচ্ছিলেন, কাকে খবর দিলে সুবিধা হবে, সেই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা থাকলে হাসপাতালেও চিকিৎসার সময় খুব সুবিধা হবে। দ্রুত বাড়ির লোককে খবর দেওয়া গেলে, তাঁরাও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। তবে বাড়ির লোক আসা পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার।