পিঠ, কোমরের ব্যথা কমবে যোগাসনে। ছবি- সংগৃহীত
বিছানায় পিঠ ঠেকালেই সারা দিনের ক্লান্তি ধুয়ে যাবে। তাই খুব শখ করে এমন গদি কিনেছেন যে শুলেই মনে হবে কোথায় যেন ভেসে যাচ্ছেন। হচ্ছেও তাই। কিন্তু বেশ কিছু দিন তেমন নরম গদিতে শোয়ার পর হঠাৎ অস্বস্তি হতে শুরু হয়েছে। একে সারা দিনের কাজের চাপ, তার উপর এই গদিতে শুয়ে পিঠ, কোমরের ব্যথা যেন আরও বেড়ে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা অনেক সময়েই বলেন, এই ধরনের আরামদায়ক, অতিরিক্ত নরম গদি শরীরের জন্য ভাল নয়। অনেকের ক্ষেত্রেই পিঠ, কোমরের ব্যথা-বেদনা বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে এই নরম গদি। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে যোগাসন। নিয়মিত পাঁচ যোগাসন অভ্যাস করলে এই ধরনের ব্যথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
১) তাড়াসন
সোজা হয়ে দাঁড়ান। পায়ের পাতার মধ্যে দুই ইঞ্চি দূরত্ব রাখুন। শ্বাস নিন। হাত দুটোকে উপরে তুলে কাঁধের সমান সমান নিয়ে যান। এ বার আঙুল দিয়ে দুটো হাত জড়ান। হাতের তালু রাখুন বাইরের দিকে। এ বার শ্বাস নিতে নিতে মাথার উপর দুটো হাত নিয়ে যান। পায়ের গোড়ালিগুলো মাটি থেকে উপরে তুলুন। পায়ের পাতার উপর শরীরের ভারসাম্য রাখুন। এই অবস্থায় ৩ থেকে ১০ বার শ্বাস নিন। এ বার গোড়ালির নীচে নিয়ে আসুন। শ্বাস ছেড়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসুন। দু’বার করতে পারেন এই ব্যায়াম।
পশ্চিমোত্তানাসন
সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসুন। পায়ের পাতার অভিমুখ রাখুন আপনার দিকে। শিরদাঁড়া সোজা রাখুন। এ বার শ্বাস নিন। দুটো হাত একসঙ্গে মাথার উপর সোজা করে তুলুন। এর পরে শ্বাস ছাড়ুন। এ বার আস্তে আস্তে সামনের দিকে ঝুঁকুন। দুটো হাত গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছলে একটির কব্জি দিয়ে আর একটি ধরে রাখুন। মাথা রাখুন হাঁটুতে। এর পর শ্বাস ছাড়ুন। খেয়াল রাখুন শিরদাঁড়া যেন সামনের দিকে প্রসারিত থাকে। শ্বাস নিন। এর পরে আস্তে আস্তে দুটো হাত সরিয়ে মাথার উপর নিয়ে গিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এ বার হাত দুটো নামিয়ে নিয়ে আগের ভঙ্গিতে ফিরে যান।
৩) বালাসন
হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসুন। এ বার দুই হাত প্রসারিত করে পেট মুড়ে সামনের দিকে ঝুঁকে যান। বুক যেন ঊরু স্পর্শ করে। মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে রাখুন। শ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন।
পিঠ, কোমরের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘ভুজঙ্গাসন’ অব্যর্থ। ছবি- সংগৃহীত
৪) ভুজঙ্গাসন
উপুড় হয়ে ম্যাটের উপর শুয়ে পড়ুন। দুই হাত ভাঁজ করে বুকের দু’পাশে রাখুন। এ বার শ্বাস নিতে নিতে মাথা এবং বুক মাটি থেকে উপরের দিকে তোলার চেষ্টা করুন। মাথা এবং ঘাড়ও যতটা সম্ভব পিছন দিকে হেলিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখবেন কোমরের নীচ থেকে বাকি অংশ যেন মাটি স্পর্শ করে থাকে। এই অবস্থায় থাকুন ১০ সেকেন্ড। তার পর আবার আগের ভঙ্গিতে ফিরে আসুন।
৫) ধনুরাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা যতখানি সম্ভব পিঠের উপর নিয়ে আসুন। এ বার হাত দুটো ঘুরিয়ে পিছনে নিয়ে গিয়ে গোড়ালি শক্ত করে চেপে ধরুন। চেষ্টা করুন পা দুটো মাথার কাছাকাছি নিয়ে আসতে। এই ভঙ্গিতে বুক, হাঁটু এবং ঊরু মাটি থেকে কিছুটা উঠে আসবে। তলপেট ও পেট মেঝেতে রেখে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। তার পর আবার পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে যান।