Infections During Monsoon

বর্ষায় সর্দিকাশি বা পেটের সংক্রমণ লেগেই থাকে? দই খাবেন না উষ্ণ দুধ? কী বলছেন চিকিৎসকেরা

প্রতিরোধ শক্তি উন্নত করতে গরম পানীয় বা খাবার খাওয়ার সঙ্গে কি রোগ প্রতিরোধের সত্যিই কোনও যোগ আছে? এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদের মত কী?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩ ১৮:৩১
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ

সকালে জলখাবারে দই-চিঁড়ে খান অনেকেই। কারণ দুধ সহ্য হয় না। গ্যাস, অম্বলের সমস্যা হলে দুধের বদলে ছানা খেতে বলেন চিকিৎসকেরাই। কিন্তু এত কিছু করার পরেও সেই বর্ষাকালেই আবার পেটের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায় বেশি। কেউ কেউ আবার ভোগেন ডায়েরিয়াতেও। তা হলে কি এই সময়ে দই-চিঁড়ে না খেয়ে দুধ-মুড়ি খেলেই ভাল হত? বর্ষাকালে প্রায় সব বাড়িতেই এক-আধ দিন খিচুড়ি রান্না হয়েই থাকে। সঙ্গে ভাজাভুজি আর আচার থাকা চাই-ই চাই। কিন্তু এই সব খাবার খাওয়ার পরেই গলা-বুক জ্বালা শুরু। একই খাবার গরমকালে বা অন্যান্য সময়ে খেলে তো এমন হয় না। তা হলে সমস্যাটা কোথায়? প্রতিরোধ শক্তি উন্নত করতে গরম পানীয় বা খাবার খাওয়ার সঙ্গে কি রোগ প্রতিরোধের সত্যিই কোনও যোগ আছে? এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায় বলেন, “বৃষ্টির এই আবহাওয়ায় গরম কোনও পানীয় খেলে তা শরীর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। তার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধের কোনও সম্পর্ক নেই। বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা লাগা স্বাভাবিক। তাই এ ক্ষেত্রে আরাম লাগা ছাড়া গরম পানীয়ের অন্য কোনও কার্যকারিতা নেই।”

Advertisement

এই মরসুমে একটু অসতর্ক হলেই খাবারের উপর ছত্রাক জন্মে যায়। অনেক সময়েই তা খালি চোখে দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে পেটখারাপ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অদ্রিজা বলেন, “এই ক্ষেত্রে বরং খাবার গরম করে খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। বর্ষাকলে যে হেতু খাবার খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়, তাই সেখান থেকে পেটের সমস্যা হতে পারে। গরম করে বা ফুটিয়ে খেলে, খাবারে থাকা জীবাণুগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়াও বর্ষাকালে জলবাহিত রোগের বেশ বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। জল ফুটিয়ে, ঠান্ডা করে খাওয়ার পরামর্শও দেন অনেকে।”

Advertisement

ইদানীং বাইরে খাবার খাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে এই খাবার সরবরাহকারী সংস্থাগুলির সাহায্যে মুখের কাছেই নানা রকম খাবার এসে পৌঁছে যায়। সব রেস্তরাঁ বা ছোট ছোট দোকানে খাবারের গুণমান যে খুব ভাল হয়, এমনটা নয়। সেই সব খাবার বাড়ি পর্যন্ত আনতে আনতে ঠান্ডাও হয়ে যেতে পারে। রাস্তায় কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আসছে, তা ক্রেতা জানতেও পারেন না। ফলে এই পেটের রোগ হওয়ার বহুবিধ কারণ থেকেই যায়। এ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ অর্পিতা দেব ঘোষ বলেন, “যে খাবারই খান না কেন, তা যেন দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। ফ্রিজ থেকে বার করে সরাসরি কোনও খাবার যেমন খাওয়া যাবে না, তেমন ফুটন্ত খাবার খাওয়াও খুব একটা কাজের কথা নয়।”

অনেকেই বলেন, এই সময়ে পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য দায়ী অস্বস্তিকর আবহাওয়া। কখনও ভ্যাপসা গরমে দরদর করে ঘাম হওয়া, আবার কখনও ঠান্ডায় বেশ শিরশিরে ভাব। তার উপর বৃষ্টির জল গায়ে পড়লে চুলকানি হওয়া। এই অস্বস্তিকর আবহাওয়া থেকেও নাকি পেটের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। অর্পিতা বলেন, “যে কোনও ধরনের উদ্বেগ বা অস্বস্তি মস্তিষ্কে থাকা হাইপোথ্যালামাসের কাছে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। তাই বর্ষাকালে অদ্ভুত ভাবে হাইপারঅ্যাসিডিটি মোড বেড়ে যায় অনেকের মধ্যে। সাধারণ খাবারও হজম হতে চায় না এই সময়ে। সেখান থেকেও পেটের নানা রকম সমস্যা হতে পারে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement