ছবি: প্রতীকী
দাঁত পড়ে গেলেই জোটে ‘ফোকলা’ তকমা। সে পোকা ধরা দাঁত তুলে ফেলাই হোক বা বয়সকালের দাঁত পড়ে যাওয়া। নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর স্বাভাবিক ভাবে দাঁত গজানোর কোনও উপায় থাকে না। ‘ফোকলা’ তকমা ঘোচাতে আসল দাঁতের মতো দেখতে, হুবহু নকল দাঁত বাঁধিয়ে নেন অনেকেই। তবে এ বার সেই নিয়মে বোধ হয় ছেদ পড়তে চলেছে। সাধারণ ওষুধ প্রয়োগেই যে কোনও বয়সে নতুন দাঁত গজানোর এক গবেষণা চলছে জাপানে। একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গবেষণার কাজ প্রায় শেষের পথে। সব ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট কিটানো হাসপাতালের প্রধান, চিকিৎসক, গবেষক কাটসু তাকাহাসি বলেন, “যে কোনও বয়সে নতুন দাঁত গজানোর এই ভাবনা যে কোনও দাঁতের চিকিৎসকের কাছে স্বপ্নের মতো। ডাক্তারি পড়া শেষ হওয়ার আগে থেকেই আমি এই বিষয় নিয়ে কাজ করছিলাম। আমার নিজের কাজের প্রতি আমার বিশ্বাস ছিল। এই আবিষ্কার যদি সত্যিই মানুষের কাজে লাগে, তবেই আমার গবেষণা করা সার্থক হবে।”
আগামী বছর এই ওষুধ পরীক্ষামূলক ভাবে কিছু মানুষের উপর প্রয়োগ করার পর যদি এই তা সফল হয়, তবেই তা সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও পাঁচ থেকে ছ’বছর। ২০০৫ সাল থেকে জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে গবেষণা করছেন কাটসু। ইঁদুরের উপর বিশেষ ওই ওষুধ প্রয়োগ করার পর, তিনি প্রথম আবিষ্কার করেন নতুন দাঁত গজানোর এই অভিনব উপায়টি। এই ওষুধটি আসলে ‘ইউএসএজি-১’ নামক একটি জিনের অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করবে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নির্দিষ্ট এই জিনটির কার্যকারিতা ‘নিউট্রালাইজ়িং অ্যান্টিবডি’ দিয়ে খানিক শ্লথ করে দিতে পারলেই নতুন করে দাঁত গজানো সম্ভব। এই ওষুধের প্রয়োগ যদি সফল হয়, তবে বিরল জিনঘটিত রোগ ‘অ্যানোডন্টিয়া’য় আক্রান্তদের বিশেষ উপকারে লাগতে পারে বলে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কাটসু জানান, “জন্ম থেকেই যাঁরা এই বিরল রোগে আক্রান্ত, তাঁদের দুটি পাটিতেই নতুন করে দাঁত তৈরি হতে পারে। যদিও নতুন দাঁত গজানোর ওষুধ প্রথম থেকেই প্রয়োগ করার কথা নয়। নকল দাঁত এবং দাঁত প্রতিস্থাপনের বিকল্প হিসেবে, বিরল একটি পরিস্থিতিতে এই ওষুধ প্রয়োগের কথা ভাবা হয়েছে।”