শরীরে বেশ কিছু পুষ্টিগুণের ঘাটতি তৈরি হলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। প্রতীকী ছবি।
অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মানসিক উদ্বেগ— সব মিলিয়ে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা। এই উচ্চ রক্তচাপের হাত ধরেই শরীরে বাসা বাঁধছে হৃদ্রোগ। ঝুঁকি বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর হার্ট অ্যাটাকের কারণেই অধিকাংশ মানুষ মারা যান। সম্প্রতি ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ শীর্ষক একটি মেডিক্যাল পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা জানাচ্ছে, শরীরে আয়রনের ঘাটতি হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। শরীরে আয়রনের অভাব ঘটলে হৃদ্পিণ্ডে একটি আস্তরণ তৈরি হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি মানেই হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও কমে যায়। হার্ট ভাল রাখতে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখা প্রয়োজন। নয়তো এ প্রভাব পড়তে পারে হৃদ্যন্ত্রেও।
আয়রনের ঘাটতি বাড়াতে কোন খাবারগুলি বেশ করে খাবেন? ডাল, সোয়াবিন, কাজুবাদাম, আমন্ড, সবুজ শাকসব্জি বেশি করে খান। এ ছাড়াও ডিম, মেটে, মুরগির মাংসতেও ভরপুর আয়রন থাকে। শরীরে বেশ কিছু পুষ্টিগুণের ঘাটতি তৈরি হলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে এই ধরনের খাবার বেশি করে খান। তবে শুধু আয়রন নয়। এই তালিকায় রয়েছে আরও কিছু নাম। শরীরে সেগুলির ঘাটতি বাড়িয়ে দিতে পারে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা।
১) ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন ই— হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে তিনটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে এই ভিটামিনগুলিতে যে খাবার এবং ফলে পাওয়া যায় সেগুলি রোজের পাতে রাখার চেষ্টা করুন।
২) হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে রোজ ফলিক অ্যাসিড-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এই অ্যাসিড রক্তকে তরল রাখতে সাহায্য করে। রক্ত জমাট বেঁধে গেলেই হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে। রক্ত যত পাতলা থাকবে ততই হার্ট সুস্থ থাকবে। এই অ্যাসিড সেই কাজটি করে। বাঁধাকপি, পালংশাক, মটরশুঁটি, কমলালেবু, বাতাবি লেবুতে ভরপুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড থাকে। হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষায় ফলিক অ্যাসিড-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।
হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে রোজ ফলিক অ্যাসিড-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন। ছবি: সংগৃহীত
৩) ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হার্ট ভাল রাখার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আসলে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্রোগ দূরে রাখে। হৃদ্যন্ত্রের পেশিতে চর্বি জমতে দেয় না। হৃদ্রোগের একটি বড় কারণ হল উচ্চ রক্তচাপ। ওমেগা ৩ রক্তচাপের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। বেশ কিছু সামুদ্রিক মাছে ওমেগা ৩ থাকে। রোজ না হলেও সপ্তাহে দু’-তিন দিন অন্তত এই ধরনের মাছ খেতে পারেন।