জ্বরের সময় কি ভাত খাওয়া উচিত। প্রতীকী ছবি।
জ্বর হলে ভাত খাব না রুটি খাব, সে নিয়ে আমরা কমবেশি সকলেই দ্বিধায় থাকি। আগেকার দিন মা-ঠাকুমারা বলতেন জ্বর হলে ভাত একদম নয়, বরং হাতে গড়া গরম রুটি খাও। সে মন যতই দুপুরে ভাত-ভাত করুক না কেন, মুখ বুজে রুটিই খেয়ে নিতে হত। জ্বর না কমা অবধি এক দলা ভাতও কপালে জুটতে না। কিন্তু এখন চিকিৎসক আর পুষ্টিবিদেরা সেই ধারণাই বদলে দিয়েছেন।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জ্বর হলে ভাত খাওয়া যাবে না, এমন কোনও যুক্তি নেই। জ্বর হলে এমনিতেও শরীর দুর্বল থাকে। খাওয়ার প্রতি রুচি কমে যায়। এই সময় কম খেলে বরং শরীর আরও দুর্বল হতে পারে। জ্বরের সময়ে এমন কিছু খেতে হয় যা পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য। সে দিক থেকে ভাত বেশি ভাল বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
প্যাকেটজাত খাবারের মতো ভাতে সোডিয়াম, গ্লুটেন থাকে না। বিশেষ করে ট্রান্স ফ্যাট থাকে না, যা খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা থাকে৷ স্যাচুরেটেড ফ্যাটও থাকে না। বরং ভাতে থাকে কার্বোহাইড্রেট যা শরীরকে শক্তি ও পুষ্টি জোগায়। তবে ভাত খেতে হবে নিয়ম মেনে। একবারে একগাদা খেয়ে ফেললে তাতে কোনও লাভই নেই। ভাত পরিমিত খেলে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতিও পূরণ হয়।
ভাত কী ভাবে রান্না করবেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জ্বরের সময় একটু নরম বা গলা ভাত খাওয়াই ভাল। ভাত বেশি ঝরঝরে করতে গিয়ে অনেক ক্ষণ ধরে ফ্যান ঝরালে অর্ধেকের বেশি ক্যালসিয়াম বেরিয়ে যাবে। তাতে কোনও উপকারই হবে না।
খুব বেশি সরু চালের ভাতও খেতে বারণ করছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদেরা। বেশি সরু চালের পুষ্টিগুণ কম। ভিটামিন ও খনিজের হারও কম। তা ছাড়া বহুবার চাল ধুলে অনেক ভিটামিনও বেরিয়ে যায়।
দিনে দু’বেলা ভাত খাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু পরিমিত খেতে হবে। সেটা হতে পারে এক কাপ কিংবা দেড় কাপ। যেটুকু ভাত খাবেন, ঠিক সেই পরিমাণই শাকসব্জি খেতে হবে। জ্বরের সময়ে কম মশলা দেওয়া হালকা রান্নাই খাওয়া উচিত। সিদ্ধ সব্জিই বেশি ভাল। বাড়িতে কম তেলে রান্না করা খাবারই খান। অসুখের সময়ে বাইরের খাবার ছুঁয়েও দেখবেন না।