Neonatal Jaundice

সদ্যোজাতের জন্ডিস কেন হয়? কী কী লক্ষণ দেখা দেয় খুদের, ভয়ের কারণ আছে কি?

প্রসবের কত দিনের মধ্যে জন্ডিস ধরা পড়ে? চিকিৎসা দেরিতে শুরু হলেই বিপদ। বাবা-মায়েরা লক্ষণ চিনে নিন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪ ১২:৩৪
Share:

সদ্যোজাতের কী কী লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসকের কাছে যাবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

জন্মের পরেই জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয় অনেক শিশুরই। সদ্যোজাতের জন্ডিস ধরা পড়লে বাবা-মায়ের আতঙ্কের শেষ থাকে না। তাঁরা ভাবতে শুরু করেন, এই বুঝি খারাপ কিছু হল। শিশু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, নবজাতকের শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি থাকলে জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয়। শিশুর শরীর ও চোখ হলুদ হয়ে যায়। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দুর্বল হতে শুরু করে। এই সময়ে শিশুকে নীল আলোর নীচে রাখেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

সদ্যোজাতের জন্ডিস হওয়ার তার অনেক কারণ রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, শিশু যত দিন মায়ের গর্ভে থাকে তত দিন মায়ের ধমনী থেকেই অক্সিজেন পায়। মায়ের শরীর থেকে গর্ভজাত শিশুর শরীরে অক্সিজেন বয়ে নিয়ে যায় লোহিত রক্তকণিকা। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে তার নিজের ফুসফুস কাজ করা শুরু করে দেয়। তখন অতিরিক্ত লোহিত কণিকগুলি ভাঙতে শুরু করে। লোহিত কণিকা ভাঙলে তার থেকে বিলিরুবিন নামের হলুদ রঙের এক রঞ্জক বার হয়। এই বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি হলেই তখন বলা হয় জন্ডিস হয়েছে। লোহিত রক্তকণিকা ভেঙে যে বিলিরুবিন বার হয় তা যকৃতের মধ্যে দিয়ে যায়। যকৃৎ অতিরিক্ত বিলিরুবিন ছেঁকে নেয়, বাকিটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সদ্যোজাত শিশুর যকৃৎ পরিণত হয় না। তাই বাড়তি বিলিরুবিন ছাঁকতে পারে না। তখন জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয় শিশুর।

কাদের ঝুঁকি বেশি?

Advertisement

সময়ের আগেই ভূমিষ্ঠ হয়েছে যে শিশু অর্থাৎ ‘প্রিম্যাচিওর’ শিশুর জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

মা আর সন্তানের রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও এমন হতে পারে। ধরুন, মায়ের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ আর শিশুর যদি ‘এ’ বা ‘বি’, হয় তা হলে জন্মের পরে শিশুর জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আবার মায়ের যদি আরএইচ নেগেটিভ রক্ত হয় আর সন্তান যদি আরএইচ পজ়িটিভ হয়, তখনও শিশুর জন্ডিস ধরা পড়তে পারে।

কী কী লক্ষণ দেখা দেবে শিশুর শরীরে?

১)শিশুর ত্বক, চোখ হলদেটে হয়ে যাবে।

২) বিলিরুবিনের মাত্রা সাধারণত জন্মের ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়, তখনই এই সমস্যা বেশি লক্ষ করা যায়।

৩) শিশুর ত্বকের কোনও জায়গায় হালকা ভাবে চাপ দিলে সেই জায়গায় যদি হলদেটে ছাপ পড়ে, তা হলে বুঝতে হবে শিশু জন্ডিসে আক্রান্ত।

৪) হাতের তালু, পায়েও হলদেটে ছাপ পড়বে।

৫) শিশুর প্রস্রাবের রং খেয়াল রাখতে হবে। যদি তা গাঢ় হলুদ রঙের হয় তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রসবের পর পরই জন্ডিস ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু বাড়ি ফিরে আসার পরে যদি রোগের লক্ষণ ধরা পড়ে, তা হলে তা অনেক সময়েই বুঝতে পারেন না বাবা-মায়েরা। তখন চিকিৎসা শুরু হতেও দেরি হয়। জন্মের সাত দিনের মাথায় জন্ডিস ধরা পড়লে ততটা ভয় থাকে না। কিন্তু বেশি দেরি হলেই শিশুর মস্তিষ্কে তার প্রভাব পড়তে পারে। শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। তখন তা ভয়ের কারণ হয়ে ওঠে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement