Mental Health

উদ্বেগ-দুশ্চিন্তা বাড়লেই জাঁকিয়ে বসছে স্নায়ুর জটিল রোগ, লন্ডনে ৫০ পার হওয়া অনেকে আক্রান্ত

মানসিক চাপ বেড়েই চলেছে? তা হলে সাবধান। অহেতুক চিন্তাভাবনা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থেকে বাড়ছে স্নায়ুর জটিল রোগ। এর নিরাময়ের পদ্ধতি এখনও আবিষ্কার হয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ১২:২৩
Share:

অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে কী রোগ বাড়ছে? ছবি: ফ্রিপিক।

সর্ব ক্ষণ মাথায় গিজগিজ করে হাবিজাবি চিন্তা? অল্পেই উদ্বেগ বাড়ে। মন সারা ক্ষণই চঞ্চল, অস্থির। দুশ্চিন্তা মন, মস্তিষ্ক কুরে কুরে খায়। মানসিক স্থিতিটাই যেন শেষ করে দেয়। তলে তলে মনের চাপ বাড়তে থাকে। অহেতুক দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত উদ্বেগ শুধু মানসিক চাপই বাড়ায় না, মারাত্মক মানসিক রোগের কারণও হয়ে উঠতে পারে। জানেন কি, উদ্বেগ বাড়লে তার থেকে পার্কিনসন্সের মতো অসুখের ঝুঁকি বাড়ে?

Advertisement

বিশ্বাস না হলেও এটা সত্যি। ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের গবেষকেরা দাবি করেছেন, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা যদি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তা হলে তা মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলির উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। একটা সময়ে গিয়ে মস্তিষ্কের সঙ্কেত পাঠানোর ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে বসে। ধীরে ধীরে পার্কিনসন্সের মতো রোগ জাঁকিয়ে বসে।

২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল অবধি প্রায় ১ লাখ মানুষের উপর পরীক্ষা করে দেখে তবেই এমন দাবি করেছে ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডন। মুখ্য গবেষক জুয়ান বাজো অ্যাভারেজ় জানিয়েছেন, ৫০ বছরের চৌকাঠ পেরিয়েছেন এমন মানুষজনকেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, যাঁদের মানসিক চাপ, উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি, তাঁরাই জটিল স্নায়ুর রোগের শিকার হয়েছেন। দুশ্চিন্তা করতে করতে এই সব মানুষজনের নিজস্ব চিন্তাভাবনা করার শক্তিই হারিয়ে গিয়েছে। পোশাক পরিবর্তন থেকে বাথরুম যাওয়া— সব কিছুর জন্যই অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

Advertisement

মস্তিষ্কের ‘সাবস্ট্যান্সিয়া নাইগ্রা’ নামক অংশ থেকে ডোপামিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান নিঃসৃত হয়ে আমাদের ভাবনাচিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। মন ভাল থাকার পিছনেও এর ভূমিকা আছে‌। মস্তিষ্কের এই অংশ অকেজো হয়ে গেলে, ডোপামিন নিঃসরণ কমে যায়। তখনই পার্কিনসন্সের সূচনা হয়। যত দিন যায়, রোগ ক্রমেই মন ও মস্তিষ্ককে পুরোপুরি অকেজো করে দিতে শুরু করে। হাতের লেখা ছোট হতে হতে প্রায় বিন্দুর মতো হয়ে যায়। কমে যায় হাঁটার গতি। চোখের সামনে হঠাৎ ভেসে ওঠে নানা রকম ছবি। জীবনের আনন্দও কমতে শুরু করে। প্রথমে অল্পসল্প হাত কাঁপার লক্ষণ দেখা দেয়। পরে হাঁটাচলা করার ক্ষমতাও কমে যেতে থাকে। এই রোগে আক্রান্তদের অনেকেই ক্রমে স্বাভাবিক কাজ করার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেন।

সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা গেলে, এই অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলেও মত চিকিৎসকদের। ৫০ বছরের চৌকাঠ পেরনোর পরেই কোনও রকম উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে স্নায়ুরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পার্কিনসন্সের পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব কি না, তা নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। মস্তিষ্কের এই জটিল রোগ এক বার ধরা পড়লে সারা জীবনই চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে রোগীকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement