অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
কেচ্ছা-কেলেঙ্কারি সামনে এলেই সংবাদমাধ্যম, নেটমাধ্যমে তুমুল শোরগোল। ‘অতীত’ নিয়ে অযথা টানাপড়েন। সহানুভূতির নাম করে পুরনো ক্ষত আরও এক বার নতুন করে জাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। নুসরত জাহান, যশ দাশগুপ্ত, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, এ বার রাজ কুন্দ্রা, কেউ বাদ যাননি এই পর্ব থেকে। তারকারা নিজেদের ক্ষত ঢাকার আগেই অকারণ কৌতূহলে, প্রশ্নবাণে নতুন করে জেগে ওঠে সেই যন্ত্রণা। এই তালিকায় নাম নেওয়া যেতেই পারে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়েরও। চলতি বছরে পিতৃ দিবসের দিন তিনি তাঁর নেশায় নষ্ট হয়ে যাওয়া জীবনের কালো অধ্যায় সামনে এনেছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই অভিনেতাই যেন হাল্কা কটাক্ষ করলেন। টুইটে জানালেন, ‘‘যাঁরা নীরবে ব্যথা মোছার চেষ্টা করেছেন তাঁদের প্রতি অফুরন্ত ভালবাসা’’!
হঠাৎ কেন এই ধরনের বক্তব্য নেটমাধ্যমে ভাগ করে নিলেন অনিন্দ্য? তারকাদের নিয়ে কটাক্ষের বাড়বাড়ন্ত দেখেই এমন মন্তব্য তাঁর!
আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অভিনেতার অকপট স্বীকারোক্তি, কোনও বিশেষ কারণ থেকে এই উক্তি তিনি ভাগ করে নেননি। বৃহস্পতিবার সকালে নেট ঘেঁটে পংক্তিটি তাঁর চোখে পড়েছে। মনে হয়েছে, যথেষ্ট সমসাময়িক এবং অনুপ্রেরণামূলক। তাই তিনি অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে এই মুহূর্তে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।
কিন্তু অতীতে ঘটেছিল। তিনি নিজে জানিয়েছেন, সারাক্ষণ নেশায় ডুবে থাকতেন বলে তাঁর বাবাকে অনেক অপদস্থ হতে হয়েছিল। এও জানিয়েছেন, দুর্দিনে ইন্ডাস্ট্রির প্রচুর মানুষের সমর্থন পেয়েছেন। সেই তালিকা বেশ লম্বা। তাই আলাদা করে কারওর নাম তিনি নিতে চাইছেন না। পাশাপাশি তাঁর ক্ষোভ, সেই সব দিন ভোলার নয়। সেই সময় প্রকৃত মানুষ চিনেছেন তিনি। এও জানিয়েছেন, নিজের জীবন নিয়ে সত্যি বলার সাহস সবার থাকে না। তাঁর ছিল। তাই আগেও নিজেকে নিয়ে মুখ খুলেছেন। প্রয়োজনে আগামী দিনে আবার নিজেকে নিয়ে আলোচনা করবেন।
একই ভাবে তাঁর জন্যই তাঁর অপমানিত বাবার কতটা ‘আশ্রয়’ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন অভিনেতা? অনিন্দ্যর দাবি, তিনি বাবার শেষ দিন পর্যন্ত পাশে থেকেছেন। ‘‘২০১৮-য় বাবা চলে যান। সেই দিন পর্যন্ত বাবার সব দায় আমি বয়েছি। শেষ দিকে বাবাও হয়তো কিছুটা তৃপ্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু জানিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাননি’’, আফসোস তাঁর।
‘অতীত’ মুছে নতুন ভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরেছেন অনিন্দ্য। একাধিক ওয়েব সিরিজ, ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আপাতত তিনি ব্যস্ত রাজর্ষি দে-র আগামী ছবি ‘মায়া’ নিয়ে। শেক্সপিয়রের ম্যাকবেথ অবলম্বনে তৈরি এই ছবি দিয়ে বাংলা ছবির দুনিয়ায় পা রাখছেন রাফিয়াত রাশিদ মিথিলা।