Bhupinder Singh

Bhupinder Singh: হাসপাতালে বেজায় ভয় ছিল দাদার, হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন: রকেট মণ্ডল

চলে গেলেন গজল গায়ক ভূপিন্দর সিংহ। রেখে গেলেন অজস্র স্মৃতি। তারই কিছুটা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন বাদ্যযন্ত্রী রকেট মণ্ডল।

Advertisement

রকেট মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ ২০:১০
Share:

ভূপিন্দররের স্মৃতিতে রকেট মণ্ডল।

মাত্র এক সপ্তাহ যোগাযোগ ছিল না ভূপিন্দর-মিতালি সিংহের সঙ্গে। এক সপ্তাহের মধ্যে এত বড় অঘটন ঘটে গেল! ভাবতে পারছি না। একটাই কথা কেবল মনে পড়ছে, ‘হাসপাতাল ফোবিয়া’য় ভুগতেন আমার ভূপিদা। যতই অসুস্থ হয়ে পড়ুন। কিছুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ শুনবেন না। ওষুধ খাবেন না। হাসাপাতালে ভর্তি হওয়া দূরের কথা। সেই মানুষটিই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন হাসপাতালে! খবরটা পাওয়ার পরেই বুক মুচড়িয়ে উঠেছিল।

Advertisement

ভূপিন্দর-মিতালি সিংহকে নিয়ে আমার অজস্র স্মৃতি। মুম্বইয়ে গানের দুনিয়ায় বহু নতুন বাদ্যযন্ত্র এসেছে ওঁর হাত ধরে। ভূপিদা নিজে খুব ভাল হাওয়াইয়ান গিটার, রবাব বাজাতে পারতেন। যে কোনও তারযন্ত্র ওঁর হাতে ভাল খুলত। বন্ধু মদনমোহনজি দাদাকে বাদ্যযন্ত্রী থেকে গায়ক বানিয়েছিলেন। তার আগে দাদা তিন শিফটে কাজ করতেন। কারও সঙ্গে কোনও মনোমালিন্য নেই। কারও প্রতি ক্ষোভ বা হিংসে ছিল না। শুধু রাহুল দেব বর্মনের নামে কেউ বাজে কথা রটালে আর চুপ করে থাকতে পারতেন না। সঙ্গে সঙ্গে বাধা দিয়ে বলতেন, “কেন খামোখা পঞ্চমদার নামে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন! পঞ্চমদা এ ধরনের কাজ করতেই পারেন না।”

Advertisement

ভূপিন্দর সিংহ আদতে বাংলাদেশের জামাই। মিতালি সিংহ বিয়ের আগে সেই দেশের প্রথম সারির গায়িকা মিতালি মুখোপাধ্যায়। তাঁর অসংখ্য গান জনপ্রিয়। ফলে, বাংলাদেশে গেলে দাদার জামাই আদর দেখার মতো হত! সব রকম বাঙালি খাবার তৃপ্তি করে খেতেন। আর ভাতের পাতে পদ্মার ইলিশ চাই-ই। ইলিশের যত রকমের পদ হয়, সব চেটেপুটে খেতেন। আবার মুম্বইয়ে বাড়ির জন্য বাংলাদেশ থেকে মাছ নিয়েও আসতেন। এ সব নিজের চোখে দেখা। সম্ভবত এই কারণেই ওঁর বাংলা উচ্চারণে অবাঙালি টান কম ছিল। তবে সব থেকে সেরা গাইতেন গজল। ভারী গলা। সানুনাসিক স্বর। দরাজ কণ্ঠে গজল ধরতেন যখন, আসরে পিন পড়লেও শোনা যেত।

এমনই এক অনুষ্ঠানের কথা মনে পড়লে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। যে বছর আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আত্মঘাতী বিমান হামলা হয়েছিল, তার আগের দিন আমরা নিউ ইয়র্কে। অনুষ্ঠান সেরে আমি আর ভূপিদা ফিরছি। মিতালিদি থেকে গিয়েছেন। ওঁর আরও অনুষ্ঠান আছে। মুম্বইতে পা দিয়েই শুনি সন্ত্রাসবাদী হামলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে অত বড় বিল্ডিং! খবর শুনেই দাদাকে ফোন করেছিলাম। দাদা সবার আগে মিতালিদির খোঁজ নিলেন। তার পর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, একেই বলে রাখে হরি মারে কে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement