ভূপিন্দররের স্মৃতিতে দুর্গা যশরাজ
পণ্ডিত যশরাজের কন্যা দুর্গা যশরাজ। নিজেও সুগায়িকা। গানের পরিবারে জন্ম। তাই কাছ থেকে দেখেছেন বহু সঙ্গীতশিল্পীকে। তাঁদেরই অন্যতম ভূপিন্দর সিংহ। বাংলা, হিন্দি, গজল এমনকি রবীন্দ্রসঙ্গীতও তাঁর কণ্ঠে অন্য মাত্রা পেয়েছে। এই প্রজন্ম জানে না, গানের পাশাপাশি খুব ভাল গিটারও বাজাতে পারতেন বর্ষীয়ান শিল্পী।
রাহুল দেব বর্মনের প্রচুর গানে গিটার বাজিয়েছেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘জনপ্রিয় গান, ‘চুরালিয়া হ্যায় তুমনে যো দিল কো’র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গিটার বাজিয়েছিলেন ভূপিন্দরজি। এ কথা অনেকেই জানেন না।’’
দুর্গাজির দাবি, গায়কী থেকে কণ্ঠস্বর, সবেতেই প্রয়াত শিল্পী স্বতন্ত্র ছিলেন। ভারী গলায় হালকা সানুনাসিক স্বর। এই দিয়েই গানের মেজাজ বদলে দিতে পারতেন তিনি। সেই গান ‘দিল ঢুঁঢতা অ্যায় ফির ওহি’ হোক কিংবা ‘হুজুর ইসকদর ভি না ইতরাকে চলিয়ে’।
দুর্গাজির দাবি, ‘‘সবার গলায় এই সানুনাসিকতা ভাল লাগে না। ভূপিন্দজির কণ্ঠে নাসিকার এই বিশেষ স্বর বাড়তি জৌলুস হয়ে উঠেছিল। পাশাপাশি, কোনও শিল্পী বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী হলে সেটা তাঁর বাড়তি গুণ। এই কারণেই যে কোনও ভাষার গান ভূপিন্দরজি অনায়াসে কণ্ঠে তুলে নিতেন। আর সেই গানে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ছোঁয়া থাকলে তো কথাই নেই। এই ধরনের গান তাঁর গলায় যেন বেশি মানাত।’’
এই যদি গায়ক ভূপিন্দরের পরিচয় হয় ‘মানুষ’ ভূপিন্দর কেমন ছিলেন? দুর্গাজির মতে, ভীষণ নম্র অথচ স্পষ্টভাষী। কোনও দিন কারওর সামনে তাঁকে ঝুঁকতে দেখেননি। অকারণে ‘জি হুজুর’ বলতেও শোনেননি। মানসিকতায় অত্যন্ত আধুনিক, স্বল্পভাষী মানুষটি চট করে সবাইকে আপন করে নিতে পারতেন। তাঁর গানের মতোই তাঁর স্বভাব, আচরণও ছিল অননুকরণীয়।