Rudranil Ghosh

Poila Baisakh 2022: এ বছর বেঙ্গালুরুর চৈত্র সেলের জুতো কিনেছি! মাপ, সেলাই ঠিকঠাক: রুদ্রনীল

আমার একলা বাড়িতে কিন্তু পয়লা বৈশাখের ঝাড়-পোঁছ হয়। বিছানার নতুন চাদর, বালিশের নতুন ওয়াড়, জানলায়-দরজায় নতুন পর্দা ঝোলে। এই অনুভূতিগুলোয় এখনও বিশ্বায়নের আঁচড় লাগতে দিইনি। আর হ্যাঁ, এ বারেও কিন্তু বাঙালিয়ানার ধারা বজায় রেখে সেলে জুতো কিনেছি। 

Advertisement

রুদ্রনীল ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২২ ১০:২০
Share:

রুদ্রনীলের নববর্ষ মানে আজও নতুনের ছোঁয়া

সেল সেল সেল! আসুন নিয়ে যান... খুব অল্প দামে। ফুরিয়ে গেলে আর পাবেন না, এই হল পয়লা বৈশাখ।

Advertisement

এই হাঁক না শুনলেও সদ্য বেঙ্গালুরুতে গিয়ে বহু কালের এই চেনা ছবিটা দেখতে পেলাম। চলচ্চিত্র উৎসব উপলক্ষে গিয়েছিলাম সেখানে। ওখানেও চৈত্র সেল হচ্ছে! পোশাক থেকে জুতো— সব ছিল সেখানে। আমি কী কিনলাম? পরে বলছি। তার আগে বলি, আমার ছোট বেলার পয়লা বৈশাখ কিন্তু বিরাট বড় উৎসব ছিল। মা-বাবা দু’জনেই শিক্ষক। ছোট থেকেই বন্ধুদের মধ্যে অলিখিত প্রতিযোগিতা, কোন ধরনের পাঞ্জাবি পরব। নতুন জামা মানেই পাঞ্জাবি বুঝতাম। সেটা পুজো হোক বা পয়লা বৈশাখ। তার পরে মা-বাবার হাত ধরে উপস্থিত হতাম সাংস্কৃতিক আড্ডায়।

আর ছিল চৈত্র সেল। দুনিয়ার বিস্ময় নিয়ে যেন উপস্থিত হত আমার সামনে। বড় হয়ে বুঝেছি, আসলে যে জামার দাম ১০০ টাকা, পয়লা বৈশাখের ১৫ দিনের আগে তার দাম লেখা থাকত ২০০ টাকা। পাঁচ দিন আগে সেটিই কমে হত ১৫০ টাকা। সেই জামা কিনে কী খুশি আমি! নিজেকে ভাবতাম কত লাভবান, বুদ্ধিমান!

Advertisement

একা আমি নই। কমবেশি সমস্ত বাঙালিরই কিন্তু এই চাহিদা। বরং যাঁরা সেলে কিনতেন না, তাঁরা অন্যদের চোখে মনুষ্য পদবাচ্যই ছিলেন না। আমার মা যেমন প্রচুর শাড়ি কিনতে ভালবাসতেন। আমি ভালবাসি চটি। তাই আমায় বাবা দায়িত্ব দিতেন চটির সেলাই, জামার মাপ, সেলাই দেখে নেওয়ার। সেলের জিনিস তো! এক পাটির সঙ্গে আর এক পাটি হয়তো মিলল না। কিংবা জামার দুটো হাতা দু’রকম। তখনও এটা বুঝতে পারতাম না, মিলবে না বলেই ওই ধরনের জিনিসগুলো সেলে জলের দরে বেচে দিতেন দোকানদার।

এখনকার পয়লা বৈশাখ ছোট পর্দার চ্যানেলে চ্যানেলে। সকালের বৈঠকী আড্ডায়। কিছু সংগঠনের উদযাপনে। মা-বাবা নেই। তবু আমার একলা বাড়িতে কিন্তু পয়লা বৈশাখের ঝাড়-পোঁছ হয়। বিছানার নতুন চাদর, বালিশের নতুন ওয়াড়, জানলায়-দরজায় নতুন পর্দা ঝোলে। এই অনুভূতিগুলোয় এখনও বিশ্বায়নের আঁচড় লাগতে দিইনি। আর হ্যাঁ, এ বারেও কিন্তু বাঙালিয়ানার ধারা বজায় রেখে সেলে জুতো কিনেছি। পছন্দসই কোম্পানির আমার মনের মতো ডিজাইনের এক জোড়া চপ্পল। সেলাই থেকে মাপ--- খুঁটিয়ে দেখে নিয়েছি। কোথাও ছেঁড়া-ফাটা নেই। আরও অদ্ভুত, মাপেও গোলমাল নেই!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement