গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’ ছবির শুরুতেই দেখা যায় অশ্বত্থামাকে। বৃদ্ধ, অশক্ত, দুই ভ্রু-র মাঝখানে ক্ষতচিহ্ন। এই অশ্বত্থামাকে কুরুক্ষেত্রের প্রান্তরেই অভিশাপ দিয়েছিলেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ। দ্রৌপদীর পাঁচ সন্তানকে নিদ্রিত অবস্থায় হত্যা করার দায়ে শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে তাঁকে, তুলে নেওয়া হয়েছে তাঁর কপালে থাকা বিশেষ শক্তির প্রতীকটি। অশ্বত্থামার মুক্তি নেই, মৃত্যু নেই।
মহাভারতের এমন এক গাথাকেই পরিচালক নাগ অশ্বিন গেঁথেছেন কল্পবিজ্ঞানের পাঁচমিশালিতে। মুক্তির অপেক্ষায় থাকেন অশ্বত্থামারূপী অমিতাভ বচ্চন। সেই মুক্তি তাঁকে এনে দেবেন ‘কল্কি’, বিষ্ণুর দশম অবতার যিনি কলিযুগের অবসান ঘটাবেন। সময়টা ২৮৯৮। ‘স্পেশ্যাল এফেক্ট’ আর ক্যমেরার দক্ষতায় এই ছবি ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে এক মাইলফলক, এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রায় সকলেই।
কিন্তু এই যে পুরাণ ও বিজ্ঞানের মিশ্রণ, তা কি সত্যিই ভারতের আমজনতার বোধগম্য হওয়া সম্ভব? ছবি দেখে মুকেশ খন্না বলেছেন, সত্যিই এই ছবি ভারতের আমজনতার জন্য তৈরি হয়নি। তাঁর দাবি, “যে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এই ছবি তৈরি হয়েছে, তা হলিউডের সঙ্গে মানানসই। ওখানকার দর্শক আমাদের দেশের দর্শকের তুলনায় অনেক বেশি সমঝদার।” এর পর তিনি অগ্রিম ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, “আমার মনে হয় না বিহার বা ওড়িশার দর্শক এই ছবির মর্ম বুঝতে পারবেন।”
মুকেশ খন্না নিজে বিআর চোপড়ারর ‘মহাভারত’ ধারাবাহিকে ভীষ্ম চরিত্রটিতে অভিনয় করেছিলেন। শুধু তাই নয়, হিন্দি টেলিভিশনের ইতিহাসে এক জনপ্রিয় সুপারহিরো ‘শক্তিমান’ চরিত্রেও তাঁকেই পেয়েছে দর্শক। এই পরিস্থিতিতে মুকেশের বক্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’ একটি কল্পবিজ্ঞান নির্ভর ছবি। তার উপর এই ছবিতে রয়েছে তারকা সমাবেশ। প্রথম থেকেই ছবি ঘিরে উৎসাহ ছিল ভারতীয় দর্শকের মধ্যে। পরিসংখ্যান বলছে বিহার ও ওড়িশাতেও ভাল ব্যবসা করছে ছবিটি।
গত ২৭ জুন তামিল, তেলুগু, মলয়ালম, কন্নড়, হিন্দি ও ইংরিজিতে মুক্তি পেয়েছে ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’। প্রথম ৮ দিনে এই ছবি সারা বিশ্বে প্রায় ৭০০ কোটির ব্যবসা করে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে। এর পর এই ছবির দ্বিতীয় ভাগ আসবে বলে খবর।