মুক্তির সাত দিন পরও হাউজফুল ‘পোন্নিয়িন সেলভান ১’।
বিশ্ব জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘পোন্নিয়িন সেলভান ১’। মুক্তির সাত দিন পরও হাউজফুল মণি রত্নমের ছবি। এরই মধ্যে ঝুলিতে এসেছে ৩১৮ কোটি টাকা! যার মধ্যে শুধু তামিলনাড়ু থেকেই আয় হয়েছে ১৩০ কোটি। ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন এবং বিক্রম অভিনীত ঐতিহাসিক ছবি যে দর্শকের মন কেড়েছে, তা নিশ্চিত ভাবে বলছে বক্স অফিস পরিসংখ্যান।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর তামিল, হিন্দি, তেলুগু, মালয়ালম এবং কন্নড়— এই পাঁচটি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে ‘পোন্নিয়িন সেলভান ১’। ছবির মূল আখ্যান আবর্তিত হয়েছে দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস ঘিরে। অষ্টম শতকে চোল সাম্রাজ্যের ওঠাপড়া এবং সিংহাসন দখলের লড়াই সেলুলয়েডে পুনরুজ্জীবিত করে তুলেছেন মণি। যাকে বাস্তবায়িত করতে বাজেট অনেকটাই বেশি হয়ে গিয়েছে। তবে পরিশ্রম সার্থক বলে মনে করছেন নির্মাতারা। পরিসংখ্যান বলছে, তামিলনাড়ুর প্রথম ছবি ‘পোন্নিয়িন সেলভানভ ১’ যা সবচেয়ে কম সময়ে ১০০ কোটি টাকা তুলে আনতে পেরেছে। বাকি রেকর্ডও অচিরেই ভেঙে ফেলবে এই ছবি— এমনই আশা করছেন প্রযোজকরা।
চলচ্চিত্র-বাণিজ্য বিশ্লেষক ত্রিনাথ বলছেন, “পিএস১ ব্যতিক্রমী ভাবে ভাল এগোচ্ছে। দুর্গাপুজোর ছুটি ছিল, তার মধ্যেও দর্শক টানতে পারবে ভাবা যায়নি। গোটা সপ্তাহ ধরে হাউজফুল রয়েছে হলগুলো। প্রায় ৩৫০ কোটি ছুঁতে চলেছে এখন ছবিটি। যা মণি রত্নমের কেরিয়ারেও বৃহত্তম ব্লকবাস্টার!”
যদিও ইতিহাস বিকৃতির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে এ ছবিও। অভিযোগ তুলেছেন দক্ষিণীরাই। জাতীয় পুরষ্কারজয়ী তামিল পরিচালক ভেত্রিমারানের দাবি, রাজ রাজ চোল হিন্দু রাজা ছিলেন না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ভারতে আসার পর ‘হিন্দু’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে বলে জানান তিনি। খ্রিস্টীয় আটের শতকের এক জন শাসককে হিন্দু বলা আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, প্রশ্ন তুলেছেন ভেত্রিমারান। এতেই ফের দানা বেঁধেছে বিতর্ক। চোল বংশ ছাড়া আরও কিছু দক্ষিণ ভারতীয় রাজবংশের উল্লেখ রয়েছে এই ছবিতে। তাদের অধিকাংশই চোলদের শত্রু। তবে চোলদের সব সময়েই হিন্দু শাসক হিসাবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে এ ছবিতে।
তা দেখে ভেত্রিমারান বলেছিলেন, “ক্রমাগত আমাদের প্রতীকগুলি আমাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভল্লুভারকে গেরুয়াকরণ করে কিংবা রাজ রাজ চোলকে হিন্দু রাজা হিসাবে দেখিয়ে আসলে মূল সত্যিটাকে ঘাঁটা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে চলেছেন।আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, সিনেমা এমন এক মাধ্যম যা সকলের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়। ঠিক হলে ঠিক, ভুল হলে ভুল। আর রাজনীতির কাজ কিন্তু ইতিহাস সুরক্ষিত করা, যেটা আমরা ভুলতে বসেছি।”