(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে) ছবি: সংগৃহীত।
নির্বাচনের আগে একটি টিভি শো-এ যোগ দিতে চলেছেন কমলা হ্যারিস! যদি সত্যিই তা হয়, তা হলে কি বলতে হবে তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন? কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে মমতাও যোগ দিয়েছিলেন একটি টিভি চ্যানেলের রিয়্যালিটি শো-এ। যা নিয়ে সে সময় চর্চা চলেছিল। তবে পার্থক্য একটাই, মমতা টিভি রিয়্যালিটি শো-এ যোগ দিয়েছিলেন ভোট ঘোষণা হওয়ার আগে, আর কমলার ভোট ইতিমধ্যেই ঘোষিত।
ভোটের আগেই না কি আমেরিকার বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরবর্তী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তথা ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য কমলাকে দেখা যাবে একটি বিশেষ স্কেচ কমেডি শো-এ। অন্তত তেমনই জল্পনা ছড়িয়েছে কমলার গতিবিধি দেখে। ঘটনাচক্রে, তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁর মা শ্যামলা গোপালন ছিলেন মাদ্রাজি জীববিজ্ঞানী, বাবা ডোনাল্ড জে হ্যারিস ছিলেন জামাইকান-আমেরিকান অর্থনীতিবিদ। এই মুহূর্তে কমলা জোর টক্কর দিচ্ছেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। আগামী ৫ নভেম্বর সে দেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার আগে কমলা না কি এক বিশেষ টিভি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন অতিথি হিসাবে।
সূত্রের খবর, ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’ নামক ওই অনুষ্ঠানে ভোটের ঠিক আগের দিন তিনি উপস্থিত হতে পারেন দর্শকদের চমকে দিয়ে। হাস্যরসাত্মক এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে রয়েছেন ‘স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান’ জন মুলানি।
যদিও এই কানাঘুষো আগেই শুরু হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। শনিবার রাতে মিশিগান যাওয়ার পথে উপরাষ্ট্রপতির বিমান হঠাৎই ঘুরে গিয়েছিল নিউ ইয়র্কের দিকে। তার পর তাঁর গাড়িটিকে দেখা গিয়েছিল ৩০ রক ফেলার প্লাজ়ার দিকে যেতে। এই বাড়িতেই রয়েছে ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’-এর স্টুডিয়ো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের একেবারে শেষ পর্বে পৌঁছে কমলা চূড়ান্ত ব্যস্ত প্রচারের কাজে। শনিবারও নিউ ইয়র্ক পৌঁছনোর আগে তিনি জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনায় প্রচার চালিয়েছেন। ফলে জল্পনা জোরালো হচ্ছে।
যদিও কিছু দিন আগেই ওই অনুষ্ঠানের নির্মাতা লোর্ন মিশেল জানিয়েছিলেন, তিনি চাইলেও ভোট প্রার্থীদের নিয়ে আসতে পারছেন না তাঁর অনুষ্ঠানে। সেখানে অনেক রকম আইনি বাধা রয়েছে। তার পরেও কমলার অতিথি হিসাবে উপস্থিত হওয়া নিয়ে জল্পনা চলছে।
চলতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি ঠিক একই ভাবে টিভির পর্দায় দেখা গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘দিদি নম্বর ১’-এ যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় জোরদার প্রচার চলছিল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ঘিরে। মমতা যখন অনুষ্ঠানের অতিথি হয়ে যান, তখনও ভোট ঘোষণা হয়নি। জারি হয়নি নির্বাচনী আচরণবিধি। বাংলায় প্রথম দফার নির্বাচন শুরু হয়েছিল ১৯ এপ্রিল। মমতা ওই রিয়্যালিটি শোয়ে যাওয়ায় অনেকেই বলেছিলেন এই বিশেষ উপস্থিতি আসলে নির্বাচনী প্রচারের অঙ্গ।
যদিও মমতার দল তা মানতে নারাজ ছিল। তারা তুলে ধরেছিল অন্য দিক। মূলত রাজ্যের মহিলাদের ‘উজ্জীবিত’ করাই ওই শোয়ের বিশেষ পর্বের উদ্দেশ্য ছিল। সেখানে আদর্শ হিসাবে মমতা নিজের জীবনের কাহিনি শুনিয়েছিলেন। তাঁর জীবনসংগ্রামের প্রসঙ্গও উঠে এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা জানিয়েছিলেন, রাজ্যে মহিলাদের উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প রয়েছে। পরে ওই অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকসভা ভোটের প্রার্থী করেন মমতা। নির্বাচিত হয়ে রচনা এখন তৃণমূলের সাংসদ।