অনলাইনে ঋদ্ধিমা ঘোষ আর তাঁর ভাইয়ের ফোঁটা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
অনলাইনে ভাইফোঁটা! ঋদ্ধিমা ঘোষের কাছে বিষয়টা খুব নতুন নয়। যে দিন থেকে ভাই বড় হয়েছে, কর্মসূত্রে বাইরে, বিশেষ দিনে ভাইকে কাছে বসিয়ে উদ্যাপন করার সুযোগ তিনি পাননি। ব্যতিক্রম গত দুটো বছর। এ বছরেও সকাল সকাল অভিনেত্রীর ফোঁটাপর্ব সারা। “বিদেশে এখন রাত। ভাই ঘুমিয়ে পড়বে। তাই সকাল সকাল উঠে উদ্যাপন সেরে নিয়েছি”, আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন ঋদ্ধিমা।
ভাই আছেন। কিন্তু, হাত বাড়ালেই তাঁকে পাওয়া যাবে না। বছরের এই একটি দিন সব বোনেরাই চান, তাঁর প্রিয়জন কাছে থাকুন। নিজে রেঁধেবেড়ে খাওয়াবেন, মঙ্গলকামনা করবেন। আবার উপহারের ঝুলিটাও ফাঁকা থাকবে না। অনলাইনে ফোঁটা দিয়ে ঋদ্ধিমা এই স্বাদ কি পান? প্রশ্ন রাখতেই জবাব এল, “দেখুন, একেবারে না থাকার থেকে দূরে থাকাও তো ভাল? যাঁদের ভাই বা দাদা থাকেন না, তাঁদের দেখেছি, এই দিনে মনখারাপ করেন। আমার কিন্তু সেই কষ্ট নেই। দূরে থাকুক ভাই। ভাল থাকুক। অনলাইনে ফোঁটা দিয়েও খুশি।” তাঁর মতে, মাত্র আড়াই বছরের ফারাক তাঁদের। পিঠোপিঠি ভাই-বোন। তাই এখন বন্ধুত্বটাই বেশি। “এই খুনসুটি, বন্ধুত্ব বজায় থাকুক, সেটাই প্রার্থনা। ভাইফোঁটা তো সেই বন্ধুত্বকে আরও গাঢ় করে তোলার উপলক্ষ মাত্র।”
তার পরেই আফসোস, “জানেন, ভাই আমায় আজ পর্যন্ত ফোঁটার একটাও উপহার দেয়নি!” উল্টো দিকে অভিনেত্রী কিন্তু খুবই ভাল দিদি। প্রত্যেক বছর কিছু না কিছু উপহার অনলাইনে ভাইকে পাঠিয়ে দেন। কলকাতায় এলে কথাই নেই। ভাইকে চোখে হারান। “ওর সব আবদার পূরণের চেষ্টা করি”, বলেছেন তিনি। কলকাতায় অবশ্য ঋদ্ধিমার আরও তিন ভাই রয়েছেন। অভিনেতা ইন্দ্রাশিস রায়, তাঁর ভাই চন্দ্রাশিস রায় আর অভিনেতা স্বামী গৌরব চক্রবর্তীর ছোটবেলার এক বন্ধু। তাঁদের প্রতি বছর নিয়ম করে ফোঁটা দেন।
কথাপ্রসঙ্গে ছেলেবেলার গল্পও ছায়া ফেলেছে। ঋদ্ধিমার কথায়, “একেবারে ছেলেবেলায় দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজো কাটত এলাহাবাদে, মামার বাড়িতে। সমস্ত ভাইবোন একসঙ্গে দারুণ মজা করতাম। উঁচু ক্লাসে ওঠার পর সেই মেয়াদ কমে শুধু কালীপুজো, ভাইফোঁটায় এসে দাঁড়ায়।” একটু থেমে হাসতে হাসতে যোগ করলেন, “তখন ফোঁটা দেওয়ার পর ভাইকে আশীর্বাদ করলে পায়ে হাত দিয়ে নমস্কার করত!” এখন অনলাইনের চক্করে ভাই প্রণামপর্ব থেকে দূরে? “একেবারেই না”, ঝটিতি জবাব এল। ঋদ্ধিমা বললেন, “ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদের পর উঠে দাঁড়াই। ভাই প্রণাম করে! এ সব কেউ ছাড়ে নাকি?” আরও জানালেন, ভাইয়ের প্রিয় চকোলেট, লাড্ডু, বরফি ডিশে সাজানো থাকে। এ বছর তিনি ভাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে লাড্ডু খেয়ে উপোস ভেঙেছেন।