ভাইফোঁটায় দিদির জন্য মনখারাপ সাহেব চট্টোপাধ্যায়ের। নিজস্ব চিত্র।
মানুষ প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে। দূরত্ব ঘুচে যাচ্ছে মানুষের সঙ্গে মানুষের। ভাইফোঁটার মতো উৎসবে তাই ক্রমশ বৈচিত্র বাড়ছে! যাঁরা ভাইকে কাছে পান তাঁরা রীতি মেনে উদ্যাপন করেন। যাঁরা দূরে তাঁদের ফোঁটা অনলাইনে। অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায় দুই ধারার ফোঁটার সঙ্গেই পরিচিত। বোন থাকতেন দিল্লিতে। তিনি অনলাইনে ফোঁটা দিতেন। দিদি একই শহরের বাসিন্দা। তিনি ফোঁটা দিয়ে যত্ন করে পাত পেড়ে খাওয়াতেন ভাইকে। দু’জনেই ‘করতেন’, কারণ এ বছর তাঁরা দু’জনেই আর নেই!
বোন মারা গিয়েছেন ডেঙ্গির আক্রমণে। অসুস্থতা কেড়ে নিয়েছে দিদিকেও। তা হলে কি এ বছর সাহেবের ফোঁটা নেই?
জানা গিয়েছে, গত ২৭ অক্টোবর থেকেই সাহেব রয়েছেন মুম্বইয়ে। বলিউডের প্রথম সারির এক প্রযোজনা সংস্থার ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি। ভাইফোঁটার আগের রাত, অর্থাৎ শনিবার অবশ্য কলকাতায় ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু রবিবার ভোরেই পা়ড়ি দেন মায়ানগরীর উদ্দেশে। ভোর পাঁচটা থেকেই শুটিংয়ে ব্যস্ত। প্রথম পর্বের শুটিং খার অঞ্চলে হয়েছে। রবিবার পুরো টিম প্রথম সারির একটি হোটেলে শুটিং সারছেন।
খবরের সত্যতা যাচাই করতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। শুটিং নিয়ে যথারীতি তাঁর মুখে কুলুপ। কথা বলেছেন ভাইফোঁটা নিয়ে। সাহেব বলেছেন, “সকাল থেকে বোন আর দিদি পালা করে ফোঁটা দিত। বোন ভিডিয়ো কল করে সবটা সারত। কলকাতায় এলে বাকিটা পুষিয়ে দিত। ওর জন্য তুলে রাখা উপহারটাও তখন ওকে দিতাম। আফসোস, দিদিকে কখনও কিছু দিইনি। আজ মনে হচ্ছে, কখনও কিছু যদি দিতাম ওকে। আজ এত কষ্ট হত না।” বদলে দিদি তাঁকে হাত ভরে উপহার দিতেন। সকাল থেকে উপোস করে ফোঁটা দিতেন। সাহেব যা যা পছন্দ করেন সে সব নিজের হাতে রেঁধে খাওয়াতেন।
“বরাবর চিংড়ি আর মুরগির মাংস আঙুল চেটে খাই। দিদির রান্নার গুণে সে সব যেন অমৃততুল্য হয়ে উঠত”, স্মৃতি হাতড়ে বললেন অভিনেতা। সাহেব কি আগামী বছর কারও থেকে ফোঁটা নেবেন? অভিনেতা জানালেন, অনেকেই তাঁকে ফোঁটা দিতে চান। তবে এখনই কিছু বলতে পারছেন না। মন সায় দিলে আগামী বছর হয়তো ছন্দে ফিরতে পারেন।