বলিউড অভিনেতা গোবিন্দ নামদেব। ছবি: সংগৃহীত।
তিন দশকের বেশি অভিনয় জীবনে নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন গোবিন্দ নামদেব। অভিনীত চরিত্রগুলির নানা বৈশিষ্ট্যের রসদ তিনি জীবন থেকেই পান বলে জানান তিনি। শিক্ষা নেন চারপাশ কিংবা নিজের যাপনের মধ্যেই। বাস্তবকেই ফুটিয়ে তোলেন পর্দায়, তাই গোবিন্দের অভিনয়ে প্রাণ খুঁজে পান দর্শক।
এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছিলেন, “আমি সমাজ থেকেই চরিত্রদের তুলে আনি। আমার দেখা মানুষজনের বৈশিষ্ট্য চরিত্রের মধ্যে ফুটিয়ে তুলি। সেই সূক্ষ্মতা পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারি বলেই এত সত্যি বলে মনে হয় সেগুলি, দর্শকের মনে প্রভাব ফেলে।”
২০১২ সালে উমেশ শুক্লা পরিচালিত ‘ওহ মাই গড’ ছবিতে সিদ্ধেশ্বর মহারাজের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। কাকে দেখে গড়ে নিয়েছিলেন চরিত্রের আদল?
গোবিন্দের জানান, ওই ছবিতে যে চরিত্রটি করেছিলেন, তেমন এক জনকে তিনি দেখেছিলেন তাঁর দশ-এগারো বছর বয়সে। মধ্যপ্রদেশে থাকতেন তখন। সপ্তম শ্রেণি অবধি ওখানেই পড়াশোনা করেছেন।
জীবনের গল্পটিও ভাগ করে নেন গোবিন্দ। অভিনেতার কথায়, “প্রতি রবিবার বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ওখানে একটা লেকের ধারে যেতাম। আনন্দ করতাম, একটা বনভোজনের মতো হত। ঘাটের সিঁড়িতে বসে আমরা নিজেদের মতো খেলতাম, জলপান করতাম। এক দিন হঠাৎ এক সাধু এসে খুব বকুনি দিলেন আমাদের। বললেন, এই জল আমি আমার শিবলিঙ্গকে স্নান করানোর কাজে ব্যবহার করি। কোন সাহসে তোমরা নষ্ট করছ এই জল?”
গল্প এখানেই শেষ নয়। অভিনেতা জানান, এর পরেও কয়েকটি রবিবার গিয়েছিলেন সেখানে। তাঁর কথায়, “এক দিন ওখানে গিয়েছি। লেকের জল খাচ্ছি। আমার ঘাড় ধরে কে যেন ঘুরিয়ে দিল। তার পর লাঠি দিয়ে সে কী মার! দেখি সেই সাধু! তাঁর চোখ তখন রাগে জ্বলছে। ওই ক্রোধ, ওই ভয়ঙ্কর রাগের কথা আমার মনে ছিল। সিদ্ধেশ্বর মহারাজের চরিত্রে সেটাই ফুটিয়ে তুলেছিলাম। চরিত্রটি পেতেই সেই সাধুবাবার কথা মনে হয়েছিল।”
এমন আরও বহু চরিত্রই তিনি আশপাশের দেখা মানুষের আদলে গড়ে নিয়েছেন। ‘ব্যান্ডিট কুইন’-এর চরিত্রটিতে নিজের বাবার আদল এনেছিলেন। ‘প্রেম গ্রন্থ’-এর চরিত্রটিও পরিচিত এক জনের ছাঁচে ফেলেছিলেন বলে জানান গোবিন্দ।
‘আজম’ এবং ‘চিড়িয়াখানা’ ছবি দু’টিতে সম্প্রতি দেখা গিয়েছে গোবিন্দকে। ‘খুবসুরত পড়োসন’ ওয়েব সিরিজ়ে-এ দেখা যাবে তাঁকে। এর পরিকল্পনা করেছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা এবং পুত্রবধূ এর প্রযোজনা করছেন।