স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। জয়া আহসান (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
অতিমারির পর বাংলায় নাকি ছবির বাজেট পাওয়া যাচ্ছে না। প্রযোজকরা নাকি স্বল্প বাজেটেই ‘কেল্লাফতে’র সন্ধানে। তাই বাংলায় পিরিয়ড ছবির সংখ্যাও এখন কমেছে। কিন্তু পরিস্থিতি কঠিন হলেও কয়েক জন পরিচালক সাহস দেখাচ্ছেন। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ‘দেবী চৌধুরানী’ ছবির ঘোষণা করেছেন শুভ্রজিৎ মিত্র। শোনা যাচ্ছে, টলিপাড়ায় ঘসেটি বেগমের বায়োপিক তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। নেপথ্যে রয়েছেন পরিচালক অর্জুন দত্ত।
বাংলার নবাব আলিবর্দি খাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা ঘসেটি বেগম। সম্পর্কে তিনি ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলার মাসি। ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হন সিরাজ। ঘসেটি ছিলেন সেই সময়ের বাংলার অন্যতম প্রভাবশালী নারী। কথিত আছে, সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মীর জাফরকে নাকি সাহায্য করেছিলেন ঘসেটি। সে দিক থেকে অনেকেই ঘসেটির নামের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা সেঁটে দেন। কিন্তু এ রকমও দাবি ওঠে যে নিজের অজান্তেই নাকি তিনি এই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ওঠেন। সেই ঘসেটি বেগমের জীবনীই এ বারে বড় পর্দায় হাজির করতে চলেছেন অর্জুন।
সূত্রের খবর, এই বায়োপিক নিয়ে দীর্ঘ দিন গবেষণা করেছেন পরিচালক। তবে ছবির বাজেট নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় আরও সময় লাগে। বেশ কয়েক বছর আগে সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে ছবি তৈরির কথা জানিয়েছিলেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও ছবির বাজেট ছিল অন্তরায়। সম্প্রতি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি পলাশির যুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করছেন এবং সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রে তাঁর প্রথম পছন্দ অভিনেতা দেব। সূত্রের খবর, সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে ছবি মানে সেখানে ঘসেটির উপস্থিতি থাকবেই। তাই অর্জুন তাঁর ছবির ঘোষণা করতে আর দেরি করতে চাইছেন না।
এখন প্রশ্ন, ঘসেটির চরিত্রে কে অভিনয় করবেন? এর আগে অর্জুনের ‘গুলদস্তা’ এবং ‘শ্রীমতী’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তাই টলিপাড়ার একটি সূত্রের দাবি, এই চরিত্রের জন্য স্বস্তিকাকেই পছন্দ পরিচালকের। অন্য একটি সূত্রের দাবি, ছবির বিষয় ভাবনার কথা চিন্তা করেই প্রস্তাব গিয়েছে জয়া আহসানের কাছে। কারণ ছবির সময়কাল এবং তৎকালীন বাংলার নবাবি পোশাকের সঙ্গে জয়ার লুক বেশি মানানসই হবে বলেই মনে করছেন নির্মাতারা। আবার এই চরিত্রের অভিনেত্রী হিসাবে উঠে আসছে পাওলি দামের নামও। যদিও শেষ পর্যন্ত কাকে ঘসেটির চরিত্রে দেখা যাবে তা এখনও চূড়ান্ত নয়।
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে অর্জুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। পরিচালক অবশ্য কিছুটা সাবধানি পথে এগোতে চাইলেন। স্পষ্ট বললেন, ‘‘এ রকম কোনও ছবি নিয়ে এখনই ভাবছি না।’’ তবে এরই সঙ্গে পরিচালক জানালেন, ঘসেটি বেগম বাংলার ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। নিজের অজান্তেই উনি ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছিলেন। অর্জুনের কথায়, ‘‘চরিত্রটা নিয়ে এক সময় আমি পড়াশোনা করেছি। নারী মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাজ করতে আমি সব সময়েই পছন্দ করি। কখনও সুযোগ পেলে ওঁকে নিয়ে ছবি করতেই পারি।’’ পরিচালক অস্বীকার করলেও সূত্র বলছে, জোরকদমে এই ছবির প্রস্তুতি চলছে। কাস্টিং এবং লোকেশন চূড়ান্ত হলে খুব দ্রুত ছবির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সারবেন পরিচালক।