স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ওর প্রজন্মের তিন জন সেরা অভিনেত্রীর মধ্যে অন্যতম। স্বস্তিকা মানেই ‘আগুনে মেয়ে’। সময়ের সঙ্গে নিজেকে প্রতি মুহূর্তে গড়েছে, বদলেছে। অবশ্যই নিজেকে সমসাময়িক রাখতেই এই বদল। প্রয়োজনে স্পষ্ট কথা বলতেও ভয় পায় না। ওকে চোখের সামনে এ ভাবে নিজেকে গড়ে নিতে দেখলাম। একদম শুরুর স্বস্তিকা খুব সাধারণ একটা মেয়ে, যার খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। সেই স্বস্তিকাকে আজকের স্বস্তিকার সঙ্গে কোনও ভাবেই মেলানো যায় না। গত সতেরো-আঠারো বছর ধরে তিলে তিলে নিজেকে এ ভাবেই পাল্টেছে ও।
এত বদল নিয়েও স্বস্তিকা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তার কারণ আছে। ও একেবারেই ‘কসমেটিক নায়িকা’দের মতো নয়। একজন মানুষের মতো সকলের কাছে ধরা দেয়। খারাপ-ভাল, সাদা-কালো, ধূসর— সব কিছু নিয়ে একজন রক্তমাংসের মানুষের মতো। অধিকাংশ অভিনেতা-অভিনেত্রীর পক্ষে যা করা সম্ভব হয় না। সেটা ও পারে করতে। এটাই স্বস্তিকার ইউএসপি।
হ্যাঁ, আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। সেটা অনেক দিনই নেই। তা-ও প্রায় ১৪ বছর হয়ে গেল। আজ বুঝতে পারি, সম্পর্কটা থাকার নয় বলেই রইল না। কিন্তু তা বলে ব্যক্তিমানুষ হিসেবে এবং বন্ধু হিসেবে শ্রদ্ধা কখনওই হারাইনি। যদিও খুব দেখাসাক্ষাৎ হয়, এমনও নয়। তবে সৌজন্য বজায় রয়েছে। আমাদের যোগাযোগের মধ্যেও স্পষ্টতা রয়েছে। তাই আমার বিয়ের খবরে স্বস্তিকা খুশি। আমাকে তো বটেই, আমার স্ত্রী পিয়া চক্রবর্তীকেও অন্তর থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। এ বিষয়ে একটা কথা বলি, বন্ধুত্ব, সম্পর্ক নিয়ে কথা প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইন জানতে চেয়েছিল, অতীত মনে পড়লে মনখারাপ করে? আজ খোলাখুলি ভাবেই বলি, অনেক পরিণত হয়েছি। অনেক অভিজ্ঞতাও হয়েছে। সেই জায়গা থেকে বলতে পারি, আমি যে ধরনের মানুষের সঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম তেমন মানুষকেই জীবনে পেয়েছি। তার সঙ্গে থাকছি। ফলে, মনখারাপ নেই। কিন্তু যতই সম্পর্ক না-থাক, তার স্মৃতি তো থেকেই যায়। সেই জায়গা থেকে নস্ট্যালজিয়া কাজ করে। বিশেষ করে যখন সেই সময়টার কথা মনে পড়ে।
অনেকের এ-ও চর্চার বিষয়, বাকিরা থিতু হচ্ছেন। স্বস্তিকা আজও থিতু হল না। এমনও বলা হয়, আমি তো ওর বন্ধু। আমি কি কখনও ওকে অনুরোধ করেছি?
আমার জবাব, এটা সম্পূর্ণ স্বস্তিকার ব্যক্তিগত পছন্দ। হয়তো সঠিক মানুষকে আজও খুঁজে পায়নি। হয়তো থিতু হতে চায় না ও। মেয়ে অন্বেষাকে নিয়েই খুশিতে জীবন কাটাচ্ছে। বিষয়টি ওর উপরেই বোধহয় ছেড়ে দেওয়া ভাল।
অনেকে আমাদের এক ফ্রেমে দেখতে চান। আমারও আবার স্বস্তিকার সঙ্গে কাজ করতে কোনও সমস্যা নেই। পাশাপাশি, ওকে পরিচালনা করারও খুব ইচ্ছে। আমার দেখা সেরা, শক্তিশালী অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম। তাই স্বস্তিকাকে পরিচালনার করার লোভ কমবেশি সমস্ত পরিচালকেরই থাকবে। তবে কী ধরনের চরিত্রে ওকে দেখতে চাই, সেটা এখনও ভাবিনি। ওকে ক্যামেরায় ধরার আগে সেটা ঠিক করব।