আমার ভিতর থেকে অভিনেত্রী সত্তাটিকে টেনে বার করে এনেছেন তথাগতদা, বললেন বিবৃতি।
প্রশ্ন: আপনার নম্বরে ফোন করলে ‘ধাঁধার থেকেও জটিল তুমি, খিদের থেকেও স্পষ্ট’ গানটি শুনতে পাওয়া যায়… নিজের সঙ্গে মিল পান?
বিবৃতি: নিশ্চয়ই। আমি কিছু বিষয়ে খুব স্পষ্ট। আবার অনেকেই মনে করেন, কোনও কোনও ক্ষেত্রে আমি নিজের চারদিকে রহস্যের বেড়াজাল তৈরি করে রেখেছি। তাতে ভুল দেখি না। সত্যিই তো, আমার ব্যক্তিগত পরিসরে কেউ খুব একটা প্রবেশ করতে পারে না। সমাজে কোনও অন্যায় হলে, বা এক জন মহিলা হয়ে মহিলাদের জন্য প্রতিবাদ করতে হলে, অথবা ধরা যাক, পশুদের উপর অত্যাচার হলে আমি যে রকম স্পষ্ট ভাষায় কথা বলি, নিজের বিষয়ে তো আমি কাউকে কিছু বলতে পারি না। আর সেখানেই বোধ হয় এই গানটির সঙ্গে এত একাত্ম বোধ করি।
প্রশ্ন: ব্যক্তিগত বিষয় বলতে?
বিবৃতি: যাঁদের আমি ভালবাসি, তাঁদের সামনে কোনও দিনও নিজের ভালবাসা জাহির করতে পারি না। আমার ভাগ্নে, ভাগ্নিদের আমি ‘বাঁদর’, ‘ছাগল’ বলে ডাকি। যাঁরা আমাকে চেনেন, তাঁরা জানেন, ওই ডাকগুলিতেই ভালবাসা লুকিয়ে আছে। ‘সোনা’, ‘মনা’ করে ডাকলে বোঝা যাবে, তাঁরা আমার ঘনিষ্ঠ নন। মা-বাবা বা আমার সঙ্গী... সবার ক্ষেত্রেই এই তত্ত্বটি খাটে।
তথাগত আর দেবলীনার সঙ্গে বিবৃতি।
প্রশ্ন: তাতে মানুষ ভুল বোঝে আপনাকে?
বিবৃতি: ওরে বাবা! এই মহা বিশ্বে আমাকে বোধ হয় সবথেকে বেশি ভুল বোঝে মানুষ। তবে মানিয়ে নিয়েছি। ঠিক বোঝানোর জন্য আমি নিজের অনুভূতি জাহির করতে পারব না।
প্রশ্ন: ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকে আপনার এক একটি বক্তব্য পড়ে মনে হয়, আপনি অনেক কিছু বলতে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না…
বিবৃতি: হ্যাঁ। না বলতে পারার সমস্ত দম আটকানো অনুভূতি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের পাতায় প্রকাশ পায়।
প্রশ্ন: প্রেমে আঘাত পেয়েছেন?
বিবৃতি: এই দুনিয়ায় কে প্রেমে আঘাত পায়নি? আমিও ব্যতিক্রমী নই। কিন্তু ব্যক্তিগত বিষয়ে এর থেকে বেশি বলতে পারব না আমি।
প্রশ্ন: প্রেম করছেন?
বিবৃতি: আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত প্রেম! যদি আমার সম্পর্কগত অবস্থানের কথা জানতে চান, বলব, আমি প্রেমে রয়েছি। এটাই আমার সম্পর্কগত অবস্থান।
প্রশ্ন: তথাগত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নিয়ে যে গুজব রটেছে...
বিবৃতি: কী রটেছে? নিজেকে নিয়ে গুজব শুনতে খুব ভাল লাগে আমার।
প্রশ্ন: এই যে, ‘ভটভটি’ ছবির কাজ করতে গিয়েই পরিচালক-অভিনেত্রীর মধ্যে ‘সুসম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। দু’জনেই দু’জনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন...
বিবৃতি: (হেসে উঠলেন বিবৃতি) মজা লাগে এ সব শুনে। খবরের শিরোনামে থাকতে কার না ভাল লাগে। কিন্তু এ সব নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। যদিও পরের দিন তথাগতদা, দেবলীনাদির (দত্ত) সঙ্গে দেখা হলে এ সব নিয়ে হাসাহাসি করব নিশ্চয়ই।
বিবৃতির ফেসবুক স্টোরি।
প্রশ্ন: তথাগতর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কী রকম?
বিবৃতি: ভীষণ ভাল। আমার ভিতর থেকে অভিনেত্রী সত্তাটিকে টেনে বার করে এনেছেন তিনি। আর দেবলীনাদির কাছ থেকে আমি নিজেকে অন্য ভাবে সাজানোর টোটকা শিখেছি। কয়েক বছর আগের আমি আর এখনকার আমির সাজগোজের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যাবে। তা কিন্তু দেবলীনাদির জন্য। এই ছবিটি নিয়ে সেটে যাওয়ার আগে বেশ কয়েক মাস আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। মোট ৪৫ দিনে ছবিটি বানানো হয়েছে। যা এখন আর হয় না। দেড় মাস ধরে মুম্বই, পুরুলিয়া, ইত্যাদি জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজ হয়েছে। তাই বোধ হয় আমাদের সকলের মধ্যে সম্পর্ক এতখানি স্বাস্থ্যকর। যদিও এখন তথাগতদা-দেবলীনাদি, দু’জনেই ধারাবাহিকের কাজে ব্যস্ত, তাই দেখা কম হচ্ছে। দু’সপ্তাহ অন্তর দেখা হচ্ছে আমাদের। কিন্তু নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
প্রশ্ন: তথাগত বলেছিলেন, আপনার সঙ্গে প্রেম করলে সবার আগে সে কথা দেবলীনা জানবেন…
বিবৃতি: (হেসে) আমি সত্যিই এ সম্পর্কে কিছুই জানি না। তবে এ বার থেকে জানব। ভাল লাগছে শুনে। আসলে ইন্ডাস্ট্রিতে ‘ঠোঁটকাটা’ বলা হয় আমায়। তাই বোধ হয় কেউ সাহস করে এ সব বলতেও আসেনি কোনও দিন। আর সে জন্যই জানতে পারিনি।
‘ভটভটি’ ছবির পোস্টার।
প্রশ্ন: যে বিজ্ঞাপনে কাজ করলেন কিছু দিন আগে, তা তো খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। বিশেষ করে অর্ণবের গানটির জন্য…
বিবৃতি: আমি যখন জানতে পারি যে, বিজ্ঞাপনে অর্ণব গান গাইছেন, তখনই আনন্দে নাচতে শুরু করি। ছোটবেলা থেকে অর্ণবের গান শুনছি আমি। বিশেষ করে তাঁর গলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত খুব পছন্দ।বিভিন্ন শপিং মলে এখন বড় পর্দায় বিজ্ঞাপনটি চালানো হচ্ছে। নিঃসন্দেহে গর্ববোধ করছি আমি। এর আগেও মডেলিং করার সুবাদে অনেক জায়গায় ছবি টাঙানো হয়েছে আমার। কিন্তু এই বিজ্ঞাপনটি যেন আমার কাছে একটু বেশিই গুরুত্ব পায়। অভিনেতা গৌরব চানানার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তাঁর সংস্থাই এই বিজ্ঞাপনটি প্রযোজনা করেছেন।
প্রশ্ন: এখন কি ‘ভটভটি’-র মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছেন?
বিবৃতি: অবশ্যই, আমার অভিনয় জীবনে এই ছবিটির তাৎপর্য রয়েছে। এই বছরের শেষের দিকেই মুক্তি পাবে। সকলকে অনুরোধ, ছবিটি দেখুন। ভাল লাগবে। অনেক পরিশ্রমের ফল ‘ভটভটি’।