টোটা রায়চৌধুরী। — ফাইল চিত্র।
নিজের অভিনেতা সত্তার পাশাপাশি তিনি একজন ভাল নৃত্যশিল্পীও। মঞ্চে তখন বলিউডের অভিনেতা শান্তনু মহেশ্বরী, যিনি তাঁর নাচের জন্য সুপরিচিত। শুটিং শেষ। কিন্তু ফ্লোরের সকলের অনুরোধ রক্ষা করতেই চেনা ছন্দে ফিরলেন টোটা। চমকে গেলেন বলিউডের কোরিয়োগ্রাফার।
প্রতিম ডি’গুপ্ত পরিচালিত ‘চালচিত্র’ ছবিটি মুক্তির অপেক্ষায়। ছবিতে একটি বিশেষ প্রচারমূলক গানে দর্শক টোটা এবং শান্তনুকে একসঙ্গে নাচতে দেখবেন। উষা উত্থুপের গাওয়া ‘জানি না মানে’ শীর্ষক সেই গানের ভিডিয়োয় তাঁদের সঙ্গ দিয়েছেন অভিনেত্রী লহমা ভট্টাচার্য। মুম্বইয়ের কোরিয়োগ্রাফার পালকি মলহোত্রের তত্ত্বাবধানে এক দিন আগেই রিহার্সাল করেছেন টোটা। পরের দিন শুটিংও শেষ। প্যাকআপের পর প্রতিমের অনুরোধ ছিল, গানে টোটা যদি তাঁর মতো নাচতেন, তা হলে কেমন হত? কারণ, এক সময়ে মূল ধারার বাংলা ছবিতে তথাকথিত ‘ব্রেকডান্স’কে জনপ্রিয় করেছিলেন টোটা। তাই অনুরোধ রক্ষার্থেই ফিরে গেলেন অতীতে।
‘জানি না মানে’ গানের শুটিংয়ের মাঝে (বাঁ দিকে) টোটা রায়চৌধুরী এবং শান্তনু মহেশ্বরী। ছবি: সংগৃহীত।
নাচ শেষ হতেই স্টেজে উঠে শান্তনু এবং বাকি সকলে টোটাকে জড়িয়ে ধরেন। টোটার নাচ দেখে সকলের চোখেই তখন বিস্ময়। আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রতিম বললেন, ‘‘আমি শুধু অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু টোটা সকলকে চমকে দিয়েছে। ওর নাচ দেখে পুরনো টোটাকে দেখতে পেলাম।’’ তবে টোটার এই নাচটি মিউজ়িক ভিডিয়োয় থাকছে না বলেই জানালেন পরিচালক।
আর যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই টোটা কী ভাবছেন? এই মুহূ্র্তে মুম্বইয়ে শুটিংয়ে ব্যস্ত টোটা। কিন্তু প্রশ্ন শুনেই হেসে উঠলেন তিনি। বললেন, ‘‘নাচ তো আমার প্রথম ভালবাসা। মনে আছে প্রভাতদা (পরিচালক প্রভাত রায়) এক বার জানতে চেয়েছিলেন, আমি নাচতে পারি কি না। তার পর তাঁকে একটা শোয়ে আমার নাচের একটা ভিএইচএস ক্যাসেট পাঠাই। উনি তা দেখে আমাকে সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন করেন।’’
পুরনো দিনে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত টোটা। বললেন, ‘‘মুম্বইয়ের অনেকেই আমাকে ‘ডোলা রে’ (‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবির গান) গানে নাচতে দেখে বিচার করেন। কিন্তু আমি যে ব্রেকডান্সও করতে পারি, সেটা অনেকেই জানে না।’’ শান্তনু এই মুহূর্তে দেশের প্রথম সারির ‘ডান্সিং হিরো’দের মধ্যে অন্যতম। টোটা জানালেন, তাঁর নাচ দেখে ‘গঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি’ খ্যাত অভিনেতাও নাকি চমকে যান এবং জড়িয়ে ধরেন টোটাকে। অভিনেতা হেসে বললেন, ‘‘বাঙালি হিসেবে আমরা কিন্তু কারও থেকে কম নই। বাঙালি পুরুষও যে ভাল নাচতে পারে, সেটা প্রমাণ করতে পেরে ভাল লাগছিল।’’
টোটার বয়স বাড়ছে। চুল-দাড়িতে পাক ধরলেও তিনি নিজে ফিট থাকতে পছন্দ করেন। সেটা নাচের ক্ষেত্রেও তাঁকে সাহায্য করে বলেই জানালেন অভিনেতা। টোটা বললেন, ‘‘যত দিন ফেলুদা চরিত্রে অভিনয় করব, আমি জানি আমাকে ফিট থাকতেই হবে। চেষ্টা করি, ২৭ বছরের ফিটনেস ধরে রাখতে।’’ ‘জানি না মানে’ গানটি বৃহস্পতিবার মুক্তি পাচ্ছে।