বিশ্বমঞ্চে সম্মানিত আকাশবাণী কলকাতার বিশেষ ডকুমেন্টারি। ছবি: সংগৃহীত।
গত দু’দশকে আড়ে-বহরে বেড়েছে কলকাতা। বেড়েছে মানুষের চাপ, বেড়েছে যানবাহন। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দূষণ। এর মধ্যেই শহরের পূর্ব প্রান্তের ছড়িয়ে থাকা জলাভূমিটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ২০০২ সাল থেকে শহরের বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জলাভূমির গুরুত্বের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মান্যতা পায়। বলা হয় এটি কলকাতার বৃক্ক বা ‘কিডনি’, যা বর্জ্য নিষ্কাশনের মাধ্যমে সাফ রাখে শহরকে। খানিকটা প্রাকৃতিক আর বেশ খানিকটা মনুষ্যসৃষ্ট এই জলাভূমি আসলে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মোট ১২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্তরে আরও এক বার উঠে এল পূর্ব কলকাতার এই জলাভূমির প্রসঙ্গ। শহরের পরিবেশ রক্ষায় তার গুরুত্ব আর মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্কের গল্প শুনিয়ে বিশ্ব দরবারে পুরস্কৃত হল ভারত। প্রসারভারতীর তরফে আকাশবাণী কলকাতা পেল সেরার শিরোপা।
বিনোদন, না কি লোকশিক্ষা? আকাশবাণীর গুরুত্ব কোথায়? এ প্রশ্ন ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর আসতে পারে বহু জনের হিত আর বহু জনের সুখের উদ্দেশ্যেই কাজ করে চলেছে এই প্রাচীন সংস্থাটি। তাই বিনোদনের মোড়কে এমন কোনও কোনও উপস্থাপনা তাকে সমৃদ্ধ করে, যা আদতে লোকহিতের লক্ষ্যেই নির্মিত। তেমনই একটি প্রযোজনা ‘হুইস্পার অফ আ ওয়েটল্যান্ড: এ ভিশন ফর টুমরো’। এই রেডিয়ো ডকুমেন্টারির জন্যই ২০২৪ সালের ‘রেডিয়ো/ অডিয়ো এবিইউ পারস্পেকটিভ অ্যাওয়ার্ড’ বিভাগে সেরার পুরস্কার পেল ভারত, ২২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তানবুলে।
পুরস্কার প্রাপ্ত ডকুমেন্টারির প্রযোজক আকাশবাণী কলকাতার আধিকারিক শুভায়ন বালা বলেন, “জলাভূমির ভূমিকা এবং পরিবেশের সংরক্ষণে এর গুরুত্বের কথাই তুলে ধরা হয়েছিল তথ্যানুষ্ঠানে। পূর্ব কলকাতার জলাভূমিটির প্রাকৃতিক জলশোধন ব্যবস্থা এবং সমৃদ্ধ জীববৈচিত্রের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও মিশে রয়েছে।” ১৯৬৪ সালে এশিয়া-প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন স্থাপিত হয়েছিল। বিশ্বে ২৪০ টিরও বেশি গণমাধ্যম সদস্য এই ইউনিয়নের। এটিই বিশ্বের বৃহত্তম ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন। প্রতি বছর তারা সেরার স্বীকৃতি দিয়ে থাকে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে।
আকাশবাণীর ডিজি প্রজ্ঞা পালিওয়াল গৌড় বলেন, “এই সম্মান আবারও প্রমাণ করল, উচ্চমানের এবং সামাজিক ভাবে প্রাসঙ্গিক অনুষ্ঠান নির্মাণে আকাশবাণী আজও নিয়োজিত। পাবলিক সার্ভিস ব্রডকাস্টার হিসেবে তার নিরন্তর প্রচেষ্টা আজও অব্যাহত। বিশ্বমঞ্চে তরুণ আধিকারিকের এই স্বীকৃতি সংস্থার উন্নতিতেও সহায়ক হবে।”