শুধু টলিউডের সতীর্থরা নন, পরিবার নন, ঐন্দ্রিলার মায়ায় এ ভাবেই জড়িয়ে গেলেন প্রতিবেশীরাও। নিজস্ব চিত্র
টালিগঞ্জের মুভিটোন স্টুডিয়োর কয়েকটা বাড়ি আগে আইভরি টাওয়ার। গোটা আবাসন থমথম করছে। ঐন্দ্রিলা শর্মার মুখ ভুলতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। ফ্ল্যাট নম্বর ৫সির দরজার বাইরে নেমপ্লেটে ইংরিজিতে ‘শর্মা’ লেখাটা জ্বলজ্বল করছে। ভিতর থেকে ভেসে আসছে ঐন্দ্রিলার প্রিয় পোষ্যদের করুণ ডাক। ওরাও হয়তো তত ক্ষণে টের পেয়েছে দুঃসংবাদ।
অভিনেত্রীর প্রতিবেশী সীমা দাস নিজে ক্যানসার যুদ্ধে জয়লাভ করেছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “প্রতি দিন বিকেলে হাঁটতে নামত মেয়েটা। আমার সঙ্গে দেখা হত। দু’জনে একসঙ্গে হাঁটতাম। আমাকে দেখলেই বলত, ‘‘কাকিমা ফাইট ব্যাক করতেই হবে। আপনাকে দেখে অনুপ্রেরণা পাই।’’ আমিও বলতাম ‘মা, তুমি নিশ্চয়ই পারবে’।’’
রবিবার বিকেল থেকে আবাসনের বাইরে মানুষের ভিড়। তত ক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়েছে, ঐন্দ্রিলা আর নেই। প্রত্যেকেই অপেক্ষা করছেন, ছোট্ট মেয়েটিকে শেষ বারের মতো কাছ থেকে দেখতে।
এ বছর আইভরি আবাসনের দুর্গাপুজোও চার বছরে পা দিয়েছে। সেখানেও ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও পুজোয় যোগদানে অনীহা ছিল না তাঁর, জানালেন বাসিন্দারা। এক জন বললেন, “এই বছরেও অষ্টমীর দিন মেয়েটা উপোস করেছিল।” কেউ আবার চোখের জল মুছে বললেন, “সকলে একসঙ্গে ভোগ খাওয়া থেকে শুরু করে মজা করা, পুজোর জোগাড় করতে ওর জুড়ি মেলা ভার। তেমনই ভাল ছেলে সব্যসাচী।”
চোখ মুছতে মুছতে এক বর্ষীয়ান মহিলা বলে উঠলেন, “সেলিব্রিটি মানে তো দূর জগতের বাসিন্দা। কিন্তু ঐন্দ্রিলাকে দেখে কোনও দিন আমাদের সেটা মনে হয়নি। আমরা কোনও দিন ওর মুখটা ভুলতে পারব না।”
শুধু টলিউডের সতীর্থরা নন, পরিবার নন, ঐন্দ্রিলার মায়ায় এ ভাবেই জড়িয়ে গেলেন প্রতিবেশীরাও। ২৪ বছরের তাজা প্রাণ তাঁদের মাঝখান থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যেতে খাঁ খাঁ করছে আবাসন।