ঐন্দ্রিলাময় ফেসবুক! প্রার্থনায় কাজ হল না, তাঁর মৃত্যুর পর নীরবতায় এক হল টলিউড গ্রাফিক্স- সনৎ সিংহ
চব্বিশ বছর বয়সে জীবনের কতটুকুই বা দেখা হয়! তবু যেন স্বল্প সময়ে সহস্র জীবন বেঁচে নিলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। লড়ে নিলেন আরও সহস্র লড়াই। ২০ নভেম্বর, দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে হাসপাতাল সূত্রে অভিনেত্রীকে মৃত ঘোষণা করার পর শোকের কালো ছায়া নেমে আসে টলিউডে।
গত ১৯ দিন হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে যখন ঐন্দ্রিলাকে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে, সে সময় প্রার্থনা করছিলেন সকলে। সমাজমাধ্যমে দেওয়ালে দেওয়ালে শুধু একটাই নাম—‘ঐন্দ্রিলা’! কিন্তু প্রার্থনায় কাজ হল না। ফিরল না ‘ফাইটার’।
কখনও একটু ভাল, কখনও খারাপ। ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যর রেখচিত্র এঁকেবেঁকে গিয়েছে সমানে। বুধবার দু’বার হার্ট অ্যাটাকের খবর আসার পরও আশা দেখেছিলেন সঙ্গী সব্যসাচী চৌধুরী। কিন্তু গতকালই সমাজমাধ্যম থেকে ঐন্দ্রিলা সংক্রান্ত সব পোস্ট মুছে দেন তিনি। রবিবার ঐন্দ্রিলার মৃত্যুসংবাদ আসার পর ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভেট করে ফেলেন। প্রোফাইল ছবি কালো করে ফেলেন অনেক তারকাই। ফেসবুকে শোকপ্রকাশ করেন ঋদ্ধি সেন, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, দেবলীনা দত্ত-সহ আরও অনেকেই।
সুদীপ্তা চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘‘প্রার্থনায় ফল হল না। নীরবতাই জারি থাকুক। তোমায় সবাই মনে রাখবে ঐন্দ্রিলা।’’ পাশে এঁকে দেন গোলাপ।
অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত ডরোথি ফার্গুসনের এক উদ্বৃতি দিয়ে কুর্নিশ করেন প্রয়াত ঐন্দ্রিলাকে। ডরোথির উদ্ধৃতির সারমর্ম, ‘‘কেবল এক মুহূর্তের জন্য ছিলে। কিন্তু তাতেই হৃদয়ে দাগ কেটে গেলে চিরকালীন।’’
অন্য দিকে তরুণ অভিনেতা ঋদ্ধি সেনও তাঁর ক্ষুরধার লেখনীতে পোস্ট করেন,
‘‘২৪ বছর বয়েস, মৃত্যু রেয়াত করে না বয়েসকেl শতাব্দী পেরিয়েছে, বেড়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্র, বন্দুক, বোমা, যা নিমেষে ভস্ম করে দিতে পারে দেশ, মহাদেশ l কিন্তু এখনও ক্যানসার বা ছোট্ট একটা ভাইরাসের কাছে হার মেনে যাই আমরা l সব কিছু দেখেও আমরা বন্দুক চালাই, ডাক দিই গনহত্যার, উড়ে যায় যুদ্ধবিমান, কেড়ে নিতে এমন এক জীবন যা জন্মায় মৃত্যুর জন্যই। তাও সব জেনে সব বুঝে আমরা সমর্থন করি হত্যার মুখে পাল্টা হত্যা। ভাল থেকো ঐন্দ্রিলা, তুমি যে যুদ্ধ করেছো তা যেকোনও বিশ্বযুদ্ধ বা সশস্ত্র যুদ্ধের থেকে থেকে ঢের কঠিন l তাই হেরে গিয়েও লড়াইটা তুমিই জিতেছ।’’
গত ১ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে ভর্তি করানো হয় হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে ঐন্দ্রিলার। কোমায় চলে যান তিনি। রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। আর ফিরল না জ্ঞান। হাসপাতালেই প্রয়াত হলেন অভিনেত্রী।