ব্রিটনি স্পিয়ার্স
আঠেরো বছর বয়সে তাঁর গান যে ভাবে আলোড়ন তুলেছিল, ঠিক তেমন ভাবেই তাঁর অগণিত ভক্তরা আওয়াজ তুলেছেন #ফ্রিব্রিটনি। আমেরিকান পপ তারকা ব্রিটনি স্পিয়ার্স আর বিতর্ক সমার্থক। ‘...বেবি ওয়ান মোর টাইম’, ‘উপস! আই ডিড ইট এগেন’-এর গায়িকা কেরিয়ারের শুরু থেকে অজস্র চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন। কোণঠাসা অবস্থাতেও ঘুরে দাঁড়িয়ে হিট অ্যালবাম দিয়েছেন। তবে সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, টুর বা অ্যালবাম নয়, তাঁর আগামী লক্ষ্য কনজ়ারভেটরশিপ থেকে বেরিয়ে আসা। এ ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিপক্ষ বাবা জেমস স্পিয়ার্স।
গত ১৩ বছর ধরে ব্রিটনি কনজ়ারভেটরশিপের আওতায়। আমেরিকার আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির মানসিক, শারীরিক এবং বয়সজনিত সমস্যা থাকলে তাঁকে কনজ়ারভেটরশিপের আওতায় আনা যায়। এ ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির অর্থ, সম্পত্তি এবং অন্যান্য বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একজন তত্ত্বাবধায়ক থাকবেন। ২০০৮ সালে আমেরিকার আদালত ব্রিটনির বাবা জেমসকে এই দায়িত্ব দেয়। ওই সময়ে মানসিক দিক থেকে ব্রিটনি একেবারেই দুর্বল অবস্থায় ছিলেন। ঠিক তার আগেই গায়িকার দ্বিতীয় বিয়েও ভেঙে যায়। স্বামী কেভিন ফেডারলাইন তাঁদের দুই ছেলের যাবতীয় দায়িত্ব পান। তার পরেই ব্রিটনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। জেমসই এত দিন ব্রিটনির সব দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু নানা বিষয়ে ব্রিটনির সঙ্গে তাঁর বাবার সংঘাত বাধে। ২০১৯ থেকে কনজ়ারভেটরশিপ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন গায়িকা। কিন্তু নিজের আচরণের ফাঁদেই ব্রিটনি বারবার জড়িয়ে পড়েছেন। রাস্তায় আইন ভাঙা থেকে শুরু করে মানসিক অবসাদ, নেশা... ইত্যাদির কারণে বাবার নিয়ন্ত্রণ থেকে তিনি মুক্তি পাননি। এই আইনি লড়াইয়ে ম্যাডোনা, মাইলি সাইরাস, প্যারিস হিলটন শুরু থেকেই পপস্টারের পাশে রয়েছেন।
সম্প্রতি ব্রিটনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক বিস্ফোরক পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যত দিন না তিনি নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হবেন, তত দিন মঞ্চে পারফর্ম করবেন না। নিজস্ব ইনস্টা পেজে নাচের একাধিক ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘ভাবছেন তো, কেন বাড়ির লিভিং রুমে এ ভাবে নাচানাচি করছি? এখন থেকে এটাই আমার মঞ্চ। কনজ়ারভেটরশিপ থেকে ছাড়া না পেলে পেশাদার মঞ্চে আর ফিরব না।’’ ব্রিটনির অভিযোগ, এই নিয়মের ফলে তাঁর আর্থিক বিষয়ের পাশাপাশি তিনি মঞ্চে কী পরবেন, কী বলবেন... সব কিছুই তাঁর বাবা ঠিক করে দিতেন। এমনকি, ব্রিটনির গানকেও নিয়ন্ত্রণ করতে চাইতেন। ‘উনি আমার সব স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছেন,’ বা ‘যাঁদের পাশে থাকার কথা, তাঁদের থেকেই সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছি,’ ‘ভুলে যেও না কারা তোমাকে এড়িয়ে গিয়েছে, আর কারা না ডাকতেই পাশে দাঁড়িয়েছে’— এ জাতীয় মন্তব্য ব্রিটনির সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে।
অথচ শুরুতে বাবা-মেয়ের সম্পর্ক ঠিক এমনটা ছিল না। যে কনজ়ারভেটরশিপ আসলে ২০০৯ সালেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, তা আজও চলেছে। গত দু’বছর ধরে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আইনি লড়াই চালাচ্ছেন গায়িকা। সেই লড়াই সম্প্রতি চরমে উঠেছে। অন্যান্য সঙ্গীতশিল্পী এবং অগণিত ভক্ত পাশে দাঁড়িয়েছেন, বিলবোর্ড অ্যাওয়ার্ড, এমটিভি মিউজ়িক, গ্র্যামি জয়ী এই গায়িকার।