বিনপুরে অভিষেকের সভা। নিজস্ব চিত্র
বহিরাগতদের বিতাড়িত করতে গেলে জীবন গেলে যাবে, প্রাণ গেল যাবে, রক্ত গেলে যাবে। দিল্লির কাছে আত্মসমর্পণ করবে না বাংলা। শুক্রবার ঝাড়গ্রাম জেলার ভোট প্রচারে এসে এই দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঝাড়গ্রাম জেলায় শুক্রবার দু’টি জনসভা করেন যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক। প্রথমটি বিনপুরের পড়িহাটিতে। দ্বিতীয়টি নয়াগ্রামে খড়িকা মাথানি এলাকায়। বিনপুরে অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপি-কে উৎখাত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। দিল্লির কাছে মাথা নত করেননি মমতা। আপনারা চান মমতা মাথা নত করুন? আত্মসমর্পণ করুন? আমরা বাংলার সম্মান দিল্লির বুক থেকে ছিনিয়ে আনব। তার জন্য আপনাদের ঝাড়গ্রাম জেলায় ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ফল ৪-০ করতে হবে। তবেই বাংলায় ২৫০-এর বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল।’’
অভিষেক বিজেপি-কে কটাক্ষ করে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ক’জন যুবককে স্বাবলম্বী করেছে বিজেপি? সোনার ভারতবর্ষ হল না কেন? ঝাড়গ্রামে অমিত শাহের সভা বাতিলের প্রসঙ্গ তুলে ধরে অভিষেক বলেন, ‘‘৩ দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভা ছিল। এক মাস আগে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার সভা ছিল। বিজেপি-র এমন ঝাড় খাইয়েছে ঝাড়গ্রামের মানুষ, তাঁরা সভা করার আগে ভাবছে।’’
বিজেপি-র প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি জায়গায় দলের অন্দরে গন্ডগোল শুরু হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে অভিষেকের কটাক্ষ, ‘‘প্রার্থী ঘোষণার পর পার্টি অফিসে আগুন, ভাঙচুর শুরু হয়েছে। নিজেদের কর্মী-নেতাদের মধ্যে শান্তি ধরে রাখতে পারছে না, তারা নাকি বাংলায় শান্তি রাখবে!’’ অভিষেকের দাবি, ৫ মার্চ তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর কোনও অশান্তি হয়নি।
বহিরাগতদের দিয়ে বাংলা দখলের চেষ্টা সফল করতে দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘বঙ্গধ্বনী যাত্রার মাধ্যমে ১০ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেছেন মমতা। বলছে স্বাস্থ্যসাথী ভাঁওতা, এ দিকে দিলীপ ঘোষের পরিবার ওই কার্ড করিয়েছে। ভাতে পেটে মারতে পারবে না দিল্লি। দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে। রেশন দোকানে গিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হবে না। বাংলায় আসল পরিবর্তন হয়েছে তাই হেলিকপ্টার করে আসতে পারছে মোদী, অমিত-সহ বহিরাগতরা।’’
বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক বলেন, "টেলিপ্রম্পটার না দেখে মাত্র ১২০ সেকেন্ড বাংলায় কথা বলুন, আমি ১ ঘণ্টা হিন্দিতে কথা বলে দেখাব।’’ পাশাপাশি অভিষেকের দাবি, ‘‘এ বারের লড়াইটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করা নয়, এই লড়াইটা বহিরাগতদের বিতাড়িত করার। যে ভাবে ইংরেজদের বিতাড়িত করেছিল সে ভাবেই বিতাড়িত করতে হবে।’’
নয়াগ্রামের খড়িকা মাথানিতে জনসভায় অভিষেক বলেন, ‘‘বাংলা দিল্লিকে তুলে দেবেন? আপনারা কী চান দিল্লি থেকে বাংলা পরিচালিত হোক? সোনার রাজস্থান, আসাম, হরিয়ানা, অরুণাচলপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, ভারতবর্ষ হয়নি কেন? মানুষকে ভুল বুঝিয়ে সোনার বাংলা করবে বলছে। লক ডাউনের সময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে? ৭ বছরে মোদির রিপোর্ট কার্ড কোথায়? পরীক্ষার ফল দেখে বিচার করুন।’’
অভিষেকের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি-র উন্নয়ন মানে কৃষক আত্মহত্যা, নারী নির্যাতন, তপসিলি জাতি, উপজাতিদের শোষণ। ওরা যদি পয়সা দেয় তা হলে নিয়ে নেবেন। ওই টাকা আপনার টাকা।’’